প্রতীকী ছবি।
বিদ্যুৎ সংযোগের বালাই নেই। কিন্তু বিল হয়েছে ১৯২০ টাকা! সঙ্গে ফাইনও। যা দেখে মুখ থেকে কথা সরছে না সাদের আলির।
শুধু সাদের নয়, বহরমপুর ব্লকের মাঝিরা গ্রামে অন্তত গোটা সাতেক পরিবার অমন ভূতুড়ে বিল পেয়েছে। শুধু তাই নয়, বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে ওই বিল না মেটালে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হবে না। তেমনই অভিযোগ আনেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাই কেউ কেউ নতুন সংযোগের আশায় সেই বিল মিটিয়েছেন।
বছর পাঁচেক আগে গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয়। বিদ্যুতের সংযোগ পেতে অনেকে আবেদনও করেন। বিপিএল তালিকাভূক্ত এমন কয়েকজন গ্রামবাসীর বাড়িতে মিটারও বসে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। বিদ্যুৎ আসেনি। কেন সংযোগ আসছে না তা জানার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে জনা কয়েক গ্রামবাসী যান। তখনই ওই বিলের কথা সামনে আসে।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য মুরসালিম শেখ জানান, বছর পাঁচেক আগে এই গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় পাড়ার বিদ্যুৎ লাইন আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। সে সময় পাড়ায় কয়েকটি খুঁটি পোঁতা হয়েছিল। কিন্তু খুঁটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। তবে বিপিএল তালিকাভূক্ত লোকজনের বাড়িতে বিদ্যুতের মিটার দেওয়া হলেও আজও তাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। অথচ বাড়ি বাড়ি বিল পাঠানো হয়েছে। তাঁর দাবি, “বিদ্যুৎ সংযোগই দেওয়া হল না, অথচ বিল হয় কি করে? বিষয়টি জানতে গিয়েছিলাম স্টেশন ম্যানেজারের কাছে। কিন্তু তিনি আমাদের কথাই শুনতে চাননি।” ফলে সেই বিল মেটাতে হচ্ছে বাসিন্দাদের।
সাদের আলির কাছে ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত বিদ্যুতের বিল চাওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে ২০২০ টাকার ভুতুড়ে বিল মেটাতে হয়েছে সাদেরকে। সাদের জানান, বছর পাঁচেক আগে বাড়িতে মিটার বসলেও সংযোগ মেলেনি। সেই মিটার তাঁরা সম্প্রতি ফেরত দিয়েছেন। ‘কোটেশন’ জমা দিতে গেলে দফতরের আধিকারিকরা ভুতুড়ে বিল জমা দিতে বলেন। বিদ্যুৎ সংযোগের আশায় সেই বিল তিনি মিটিয়ে দেন।
ওই গ্রামের মানোয়ার হোসেনের বাড়িতেও মিটার দিলেও বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। অথচ তাঁর বাড়িতে ২০১৫ সালের অগস্ট থেকে অক্টোবর মাসের বিল এসেছে ১৫২০ টাকা এবং ১০০ টাকার ফাইন। সম্প্রতি মানোয়ার বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য দৌড়াদৌড়ি করতেই তাঁকে ওই বিল জমা দিতে বলা হয়। মানোয়ারের দাবি, “আমরা বিদ্যুৎ পেলাম না, অথচ বিদ্যুতের বিল দিতে বলা হচ্ছে। আর সেই বিল না মেটালে সংযোগ দেবে না বলছে।” মানোয়ার আরও জানান, ফাইন-সহ সেই বিল জমা দেওয়ার পরেই বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য দফতর কোটেশন জমা নিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, এ ভাবে ছয়-সাতটি পরিবার এমন বিল মিটিয়েছে।
দফতরের কান্দির ডিভিশনাল ম্যানেজার অনির্বাণ চোঙদার বলছেন, “হয়তো গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণ প্রকল্পের সময় বিদ্যুৎ সংযোগ না দিয়েই জানানো হয়েছে সংযোগ হয়েছে। যার ফলে এমনটা হয়েছে।” তাঁর আশ্বাস, লিখিত আবেদন করলে তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।