কুয়াশাচ্ছন্ন দুপুর। শনিবার শান্তিপুরের গোবিন্দপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ
আমার জন্ম যশোহরে। বয়স এখন ৮৪ বছর। সেই ১৯৬৬ সালে ফরাক্কা ব্যারাজ স্কুলে যোগ দিই দর্শনের শিক্ষক হিসেবে। অবসরের পরেও রয়ে গিয়েছি ফরাক্কাতেই। শীতের বদলও দেখছি।
তবে তখনকার শীত বলে বোঝাবার নয়। ছিল বলতে খদ্দরের চাদর। ফরাক্কা তখন চারিদিক ফাঁকা। গঙ্গার ঠান্ডা হাওয়া কাঁপন ধরাত। তবু রোজ ভোর সাড়ে ৪টেয় উঠে জগিং করতে করতে গঙ্গার পাড় ধরে যেতাম। গরম জলে স্নান করার বালাই ছিল না। ওই ঠান্ডার মধ্যেই দল বেঁধে গঙ্গায় স্নান। যত বয়স হয়েছে শীত সহ্য করার ক্ষমতা কমেছে।
ট্রেনে ফরাক্কা স্টেশনে নেমে বাসায় যেতাম রিকশাভ্যানে। মনে হত যেন বরফের মধ্যে বসে রয়েছি। গঙ্গা থেকে ঠান্ডা যেন তেড়ে আসত। এখন গোটা ফরাক্কা জুড়ে বাড়ি ঘর। কারখানা, এনটিপিসি, বাজার। তাই সে ঠান্ডা অনেকটাই উধাও। তবু তার মধ্যেই ফরাক্কায় ফুটবল খেলার তখন রমরমা। তখন সর্ষের তেল ছিল ৩ টাকা কিলো। ১টাকায় ১টা কেজি খানেক ওজনের ইলিশ ছিল ফরাক্কায়। পাওয়াও যেত প্রচুর ইলিশ। খেয়ে সুখ ছিল। খাওয়া দাওয়া করতে ভালবাসতাম। তবে এখানে তখন খুব একটা মিষ্টির দোকান ছিল না।
লেখক: অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক