শক্তিনগর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ। — নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে তাণ্ডব চালাল কয়েক জন মদ্যপ যুবক। বৃহস্পতিবার রাতে তারা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি কর্তব্যরত চিকিৎসককেও হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় পুলিশ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন রাত এগারোটা নাগাদ কৃষ্ণনগর-করিমপুর রাজ্য সড়কে ষষ্ঠীতলার মোড়ের কাছে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় জখম হন ঘূর্ণি-বিন্দুপাড়া এলাকার দুই যুবক। তাঁদের উদ্ধার করে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। এরই মধ্যে খবর পেয়ে হাসপাতালে চলে আসে বিন্দুপাড়ার বেশ কয়েক জন যুবক।
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের জখম বন্ধুদের চিকিৎসা না করে বসিয়ে রেখেছে বলে অভিযোগ তুলে তারা হইচই শুরু করে। অভিযোগ অস্বীকার করে কর্তব্যরত চিকিৎসক অরিন্দম পাল জানান, জখম একজনের আঘাত তেমন গুরুতর ছিল না। তিনি দু’জনের প্রাথমিক চিকিৎসা করে ভর্তি ও অস্ত্রোপচারের জন্য কাগজপত্র তৈরি করছিলেন। সেই মুহূর্তে আরও দু’জন গুরুতর অসুস্থ রোগী চলে আসে। তিনি তাঁদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এর মধ্যেই কুড়ি-বাইশ জনের একটা দল মদ্যপ অবস্থায় এসে তাঁর উপরে চড়াও হয়।
অরিন্দমবাবু বলেন, ‘‘আমি কোনও রকমে ভিতরে ঢুকে যাই। না হলে ওরা আমাকেও মারধর করত। আমাকে হাতের নাগালে না পেয়ে জরুরি বিভাগের কাচ ভাঙচুর করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে আমাকে শাসায়। এমনকী অপারেশন থিয়েটারের সামনেও ওরা তাণ্ডব চালিয়েছে।” খবর পেয়ে ছুটে আসে কোতোয়ালি থানার পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে তারা ১৫ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। পরে সাত জনকে গ্রেফতার করে। যাদের নিয়ে এত কাণ্ড হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে সেই আহতদের একজন মিলন বিশ্বাস বলেন, “পথের বাঁকে কাছে নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে মোটরবাইক নিয়ে রাস্তার উপরেই পড়ে যাই। পুলিশ আমাদের হাসপাতালে নিয়ে এলেও চিকিৎসা না করে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। সেই কারণেই আমাদের বন্ধুরা রেগে যায়।”
হাসপাতাল সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “এই ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। এমনটা ঘটতে থাকলে তো চিকিৎসাই করা যাবে না।’’