চলছে শেষ পর্যায়ের কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
রেলের ডবল লাইনের কাজের কারণে আজ রবিবার সকাল ৮টা থেকে রাত আট পর্যন্ত কাশিমবাজার থেকে লালগোলা পর্যন্ত কোনও ট্রেন চলবে না। ওই সময়ের মধ্যে শিয়ালদহ ও কলকাতা থেকে আসা হাজারদুয়ারি-সহ সব আপ ট্রেন কাশিমবাজার থেকেই ডাউন ট্রেন হিসাবে শিয়ালদহ ও কলকাতায় ফিরে যাবে। তা ছাড়াও এ দিন শিয়ালদহ-লালগোলা শাখায় আপ ৩টি এবং ডাউন ৪টি মিলে মোট ৭টি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সোমবার থেকে বুধবার পর্য্ন্ত ৩দিন ৬৩১৩৫ আপ এবং ৬৩১৩৬ ডাউন ট্রেনটি বাতিল করেছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেজিনগর থেকে লালগোলা পর্যন্ত রেলপথের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সুশীলকুমার ঝা বলেন, ‘‘লালগোলা থেকে জিয়াগঞ্জ পর্যন্ত রেলের ডবল লাইনে আগে থেকেই ট্রেন চলাচল করে। কাশিমবাজার থেকে জিয়াগঞ্জ পর্যন্ত রেলের ডবল লাইনের কাজ সদ্য শেষ হয়েছে। এই সদ্য শেষ হওয়া ডবল লাইনের সঙ্গে আগের ডবল লাইন সংযুক্ত করার জন্য সাময়িক ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে।’’
স্বাধীনতার পর থেকেই রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের লালগোলা শাখায় ডবল লাইন ও বৈদ্যুতিকরণের দাবিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংগঠন লাগাতার আন্দোলন করেছে। রেলযাত্রী সমিতির সম্পাদক এ আর খান বলেন, ‘‘অবশেষে ১৯৯৯ সালে কালীনারায়নপুর থেকে লালগোলা পর্যন্ত ১৫৪ কিলোমিটার রেলপথকে ডবল লাইন কার সিদ্ধান্ত নে। রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ২০০৬ সালে কৃষ্ণনগর পর্যন্ত ডবল লাইন হয়ে ২০০৬ সাল থেকে কাজ থাকে। পরে ২০১০ সালে কৃষ্ণনগর থেকে লালগোলা পর্যন্ত ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ ডবল লাইন করা সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র অশেক দাস অবশ্য বলেন, ‘‘২০১০সালে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক বিদ্বেষের কারণে প্রদেশ কংগ্রেসে সভাপতি অধীর চৌধুরীর নির্বাচনী এলাকা পলাশি থেকে জিয়াগঞ্জ পর্যন্ত রেলপথ টুকু বাদ রেখে দু’ প্রান্তের বাকি অংশ ডবল লাইন করার অনুমোদন দেন।’’ তা নিয়ে কংগ্রেস বিস্তর আন্দোলনও করেছে।
ফলে ২০১৩ সালে রেলের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর পলাশি থেকে জিয়াগঞ্জ পর্যন্ত অংশের ডবল লাইনের অনুমোদন করেন, অর্থ বরাদ্দ করেন এবং পলাশিতে ডবল লাইন প্রকল্পের শিলান্যাস করার পর মুর্শিদাবাদ জেলায় পা দেন অধীর চৌধুরী। তাঁর শিলান্যাস করা প্রকল্পের মধ্যেই পড়ছে কাশিমাবাজার থেকে জিয়াগঞ্জ পর্যন্ত এলাকা। এই অংশের ডবল লাইনের কাজ সদ্য শেষ হয়েছে। শুক্রবার সেই নতুন রেলপথে ট্রেন চালিয়ে সেফটি অফিসার সবুজ সংকেত দিয়েছেন। সেই সবুজ সংকেত পেয়ে জিয়াগঞ্জের সঙ্গে কাশিমবাজারের ডবল লাইনের সংযুক্ত করার কাজ শুরু হবে আজ রবিবার থেকে। বহরমপুর থেকে বেলডাঙা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার রেলপথে ডবল লাইন পাতার কাজ চলছে। রেলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘১৫ নভেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ করার কথা। আশা করা যাচ্ছে, এই বছরের মধ্যেই বহরমপুর থেকে বেলডাঙা পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার রেলপথে ডবল লাইন দিয়েও ট্রেন চলবে।’’ তখন শিয়ালদহ থেকে লালগোলা পুরো রেলপথটাই ডবল লাইন হয়ে যাবে। ফলে তখন রেলপথে যাত্রার সময় অনেকটাই কমবে।
আজ রবিবার বাতিল করা হয়ে্ছে ৬৩১৩২ ডাউন, ৬৩১০৪ ডাউন, ৫৩১৭৮ ডাউন, ৬৩১৩৬ ডাউন এবং ৬৩১৩৫ আপ, ৫৩১৭৫, ৬৩১৩৭ আপ ট্রেনগুলি।