মঞ্চে তখন সৌমিক হোসেন।—ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম
দলের অন্দরে ক্ষোভ জমছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। সম্প্রতি তাঁর বিরোধিতা করে দলের একাংশ জলঙ্গিতে মিছিলও বের করে। রবিবার মুর্শিদাবাদের রানিনগরে তৃণমূলের এক জনসভার ভিড় থেকে স্লোগান ওঠে— ‘সৌমিক হটাও।’ বিড়ম্বনায় পড়েন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি তথা ডোমকলের পুরপ্রধান সৌমিক হোসেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ছাড়াও মাঠে নামতে হয় দলের তাবড় নেতাদের। সভা কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে। পরে সৌমিকের বদলে তাঁর দাদা লালবাগ মহকুমা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রাজীব হোসেন বক্তব্য রাখতে উঠলে শান্ত হয় পরিস্থিতি। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল এখন কোন জায়গায় পৌঁছেছে, তা এ দিনের সভায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। ওই অভিযোগ উড়িয়ে দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘এখানেও সিপিএম এবং কংগ্রেস কিছু চর পাঠিয়েছে। তারাই এ সব করেছে।’’
তৃণমূলের এক তাবড় নেতা বলছেন, ‘‘বহরমপুরে জেলা তৃণমূলের কার্যালয়ে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের হাতে প্রহৃত হন জেলা নেতা অশোক দাস। ফের এ দিন রানিনগরের সভায় সৌমিকের হেনস্থা হওয়ার ঘটনায় কোন্দল প্রকাশ্যে এসে গিয়েছে। শুভেন্দুবাবু যতই আড়াল করার চেষ্টা করুন না কেন, বিষয়টি সকলের কাছেই স্পষ্ট!’’
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিনের সভায় তখনও শুভেন্দু অধিকারী এসে পৌঁছাননি। বক্তা হিসেবে সৌমিক হোসেনের নাম মাইকে ঘোষণা হতেই তিনি চেয়ার ছেড়ে উঠেও পড়েন। কিন্তু সভার ভিড় থেকে হই-হই করে ওঠেন দলীয় কর্মী-সমর্থকদের একাংশ। ভিড় থেকে স্লোগান ওঠে— ‘সৌমিক হটাও।’ সে কথা শুনে সৌমিক ধপ করে চেয়ারে বসে পড়েন। তার পর থেকে গম্ভীর মুখে সভা ম়ঞ্চের চেয়ারেই বসে থাকেন তিনি। সৌমিক বলছেন, ‘‘কংগ্রেস ও সিপিএমের লোক সভায় এসে এমনটা করেছে।’’ এ দিনের মঞ্চে জেলার নেতা-বিধায়ক থেকে মন্ত্রী সকলে মঞ্চে থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সুব্রত সাহা। যদিও শুভেন্দু বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি আমার সঙ্গে কথা বলেই অন্য একটি কাজে গিয়েছেন।’’