তোলার দাপটে মাঝপথে থমকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র

সরকারে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছেন তোলাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। শুধু বার্তা দেওয়াই নয়, সল্টলেকে দলের দাপুটে কাউন্সিলরকে জেলেও পোরা হয়েছে। কিন্তু, এত কিছুর পরেও পুরোপুরি ঠেকানো যাচ্ছে না তোলাবাজি। শাসক দলের নেতাদের তোলাবাজির জেরে কান্দির আন্দুলিয়ায় একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ এক মাস ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে।

Advertisement

কৌশিক সাহা

কান্দি শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০০:৫৬
Share:

থমকে কাজ। —নিজস্ব চিত্র

সরকারে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার্তা দিয়েছেন তোলাবাজি বরদাস্ত করা হবে না। শুধু বার্তা দেওয়াই নয়, সল্টলেকে দলের দাপুটে কাউন্সিলরকে জেলেও পোরা হয়েছে। কিন্তু, এত কিছুর পরেও পুরোপুরি ঠেকানো যাচ্ছে না তোলাবাজি।

Advertisement

শাসক দলের নেতাদের তোলাবাজির জেরে কান্দির আন্দুলিয়ায় একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ এক মাস ধরে বন্ধ হয়ে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় প্রশাসন কাজ শুরু আশ্বাস দিয়েছে। পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বও।

কান্দি ব্লকের লক্ষ্মীকান্তপুরে একটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নতুন ভবন তৈরি হচ্ছিল। প্রকল্পটি মোট ১২ লক্ষ টাকার। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যেই একটি চার কক্ষের দোতলা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরির কাজ চলছিল। ভবনের কাজ শেষ হলেও দরজা, জানালা-সহ বেশকিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে।

Advertisement

অভিযোগ, স্থানীয় তিন তৃণমূল কর্মী ঠিকাদার সংস্থার কাছে ৫০ হাজার টাকা চায়। ঠিকাদার সফিকুল শেখ বলেন, ‘‘পাঁচ বছরের পুরনো কাজ। এমনিতেই লোকসান। তার উপর ৫০ হাজার টাকা পাব কোথায়?’’ দিতে রাজি হননি তিনি। তার পরেই জোর করে কাজ বন্ধ করে দেন তারা।

অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী জাহির শেখ ও উজ্জ্বল মিঁয়া ও মজিবর শেখ বলে, “হাসপাতালে আসা রোগীরা প্রতিক্ষালয়ে বিশ্রাম নিত। সেই জায়গা ভেঙে সেপটিক ট্যাঙ্ক হচ্ছে। আমরা তার প্রতিবাদ করছি মাত্র।’’ উন্নয়নের কাজে তাঁরা যে বাধা দিতেই পারেন না তা বার বার জানালেন। তাঁদের দাবি, তাঁরা যা করেছেন, দলকে জানিয়েই করেছেন। অন্যদিকে হাসপাতালে আসা রোগীরা জানিয়েছেন, ওই প্রতীক্ষালয়ে দুষ্কৃতীরা আড্ডা দিত। সেখানে মদ, গাঁজার আসর বসত। সেখান থেকে নির্মাণ কর্মীদের একাধিকবার শাসানোও হয়েছে।

আন্দুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের মালেক শেখ বলেন, “সরকারি কাজ কেন বন্ধ হয়ে গেল তা আমি বিডিওকে দেখার অনুরোধ করেছি।’’

ঠিকাদার সংস্থা জানিয়েছে, ওই প্রতিক্ষালয় ভেঙে সেখানে সেপটিক ট্যাঙ্ক নির্মানের নির্দেশ দিয়েছিলেন কান্দির বিডিও সুরজিৎ রায়। সফিকুল শেখ বলেন, ‘‘আমি পুরো বিষয়টি বিডিওকে জানিয়েছি।’’ সুরজিৎবাবু বলেন, “ওই প্রতীক্ষালয়ে সমাজ বিরোধীরা যে আড্ডা দেয়, তার প্রমাণ আমি পেয়েছিলাম। তাই ওই প্রতীক্ষালয়টি ভেঙে সেখানে সেপটিক ট্যাঙ্ক তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।’’ বন্ধ হওয়া কাজ ফের শুরু হবে বলে জানান তিনি।

জেলা তৃণমূলের কার্যকারি সভাপতি উজ্জ্বল মন্ডল বলেন, “যারা ওই কাজ করেছে তারা প্রত্যেকেই তৃণমূলের সাথে জড়িত। উন্নয়ন মূলক কোন কাজেই বাধা দেওয়ার কাজ দল তার প্রশ্রয় দেবেনা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement