ক্লাসে নেই শিক্ষক। খেলায় ব্যস্ত পড়ুয়ারা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নয় শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে এক জন আগেই ছুটি নিয়েছিলেন। সোমবার এক জন স্কুলে আসেননি আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা-সহ ছয় জন এক সঙ্গে গিয়েছিলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে। স্কুলে সাকূল্যে এক জন শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও তাঁর একার পক্ষে প্রাক-প্রাথমিক থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সব ক্লাস নেওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে সোমবার রানাঘাট-৩ চক্রের অধীনে থাকা পূর্ব ন’ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন কার্যত শিকেয় ওঠে।
গত ১০ মার্চ সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের সমর্থনে কর্মবিরতিতে প্রাথমিকের যে শিক্ষক, শিক্ষিকারা যুক্ত হয়েছিলেন, তাঁদের কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হচ্ছে। গত শুক্রবার রানাঘাট-৩ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক দফতর থেকে ধানতলা থানার পূর্ব ন’ পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আট শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ১০ তারিখ স্কুলে অনুপস্থিতির কারণ দর্শানোর বিষয়টি জানানো হয়। সোমবার সেই নোটিশ আনতেই তাঁরা অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে গিয়েছিলেন।
বিদ্যালয়ের সহ-শিক্ষিকা মমতা রায় বলেন, ‘‘১০ তারিখ দিন আমি একা স্কুলে এসেছিলাম। কিন্তু কোনও পড়ুয়া ওই দিন স্কুলে আসেনি। স্কুলে দাঁড়িয়ে থেকেই ওই দিন বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সোমবার প্রধান শিক্ষিকা-সহ অন্যরা স্কুলে এসেছিলেন। দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ তাঁরা আমাকে কিছু না জানিয়ে স্কুল থেকে চলে যান। পরে প্রধান শিক্ষিকা ফোন করে বলেন, তাঁরা প্রত্যেকেই অবর বিদ্যালয়ের পরিদর্শকের কাছে যাচ্ছেন। বাধ্য আমাকে ১৫০ পড়ুয়ার দায়িত্ব সামলাতে হয়েছে।’’
প্রধান শিক্ষিকা শিপ্রা বিশ্বাস মজুমদার বলেন, ‘‘এ দিন আমরা শো-কজ় নোটিস আনতে গিয়েছিলাম। অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিসে বসেই ওই নোটিসের উত্তর লিখিত আকারে জমা দিয়ে এসেছি।’’ অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সঞ্চারী অধিকারীকে একাধিক বার ফোন করা হলে তিনি ফোন তোলেননি। আবার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রাথমিক সুকুমার পসারি বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা যদি ঘটে থাকে তা হলে ঠিক হয়নি। পঠনপাঠনের বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি কী হয়েছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’