মেঘমুলুকে: বুধবার বহরমপুরে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
ঝড়-বৃষ্টি-শিলার ত্র্যহস্পর্শে মাথায় হাত চাষির।
বুধবার দুপুরে নদিয়া-মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টিতে ধান ও আমেও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এ দিন সকালে বহরমপুরের ওয়াইএএম মাঠের গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। বিদ্যুতের দু’টি খুঁটি ভেঙে পড়ায় কিছুক্ষণ যানচলাচল বন্ধ ছিল। লালবাগ, লালগোলা, ভগবানগোলা-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। বহরমপুর, ভরতপুর ও বড়ঞায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টিও হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন, “ঝড়-বৃষ্টির কারণে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় শতাধিক বাড়িঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানে ত্রিপল-সহ অন্য ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে।’’ চাষিরা বলছেন, ‘‘এই সময় কালবৈশাখী হয়েই থাকে। কিন্তু সোমবার ও বুধবারের শিলাবৃষ্টি সব শেষ করে দিল।’’
সোমবারে ঝড়-বৃষ্টিতে মূলত ধানের ক্ষতি হয়েছিল। এ দিন সেই ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেই মনে করছে কৃষি দফতর। মুর্শিদাবাদের উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপসকুমার কুণ্ডু বলেন, “দু’দিনের ঝড় বৃষ্টিতে ধান চাষের ক্ষতি হয়েছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।” উদ্যান পালন বিভাগ সূত্রে খবর, ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে আমেরও।
কৃষ্ণগঞ্জ, মাজদিয়া এলাকায় ঝড়ের পাশাপাশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ধান ও অন্য ফসলের সঙ্গে আমেরও ক্ষতি হয়েছে। মাজদিয়ার আমচাষি রতন সরকার বলছেন, ‘‘এমনটা হবে, ভাবিনি। বড় লোকসান হয়ে গেল।’’
মুর্শিদাবাদে ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। কিছু এলাকায় মাঠ থেকে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবার কিছু এলাকায় সবে শিস ধরতে শুরু করেছে। মাঠে ধান কেটে আর তোলার সুযোগ পাননি অনেক চাষি। এ ছাড়াও ঝড়ে ঝরে পড়েছে পাকা ধান।
কান্দির ভরতপুর ১ ও বড়ঞায় শিলাবৃষ্টির কারণে বোরো ধানের সঙ্গে আনাজেরও ক্ষতি হয়েছে বলেই দাবি চাষিদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, বেশিরভাগ জমিতে বোরো ধান পেকে গিয়েছে। এখন শুধু ধান কেটে ঘরে তোলার অপেক্ষা। বুধবারের শিলাবৃষ্টি সব শেষ করে দিল।
ভরতপুরের রিপন দাস বলেন, “বিঘাখানেক জমিতে আনাজের চাষ করেছি। কিন্তু এমন শিলাবৃষ্টিতে সে চাষ মাঠেই মারা গেল।” কান্দি মহকুমা কৃষি আধিকারিক মৃদুলকুমার ভক্ত বলেন, “শিলাবৃষ্টিতে সব ফসলেরই ক্ষতি হবে।” রঘুনাথগঞ্জ, ধুলিয়ানে, জঙ্গিপুর শহরে বিভিন্ন জায়গায় এ দিনের বৃষ্টিতে জল জমে যায়।