প্রতীকী ছবি।
আশি লক্ষ মানুষের জেলায় দেখা দিয়েছে রক্তের তীব্র সঙ্কট। এই সঙ্কটে রক্ত জোগানোর প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া বা সমাজ মাধ্যম। বহরমপুর জেলা ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্ব প্রাপ্ত চিকিৎসক জয়ন্ত বিশ্বাস বলছেন, ‘‘গরমে মুর্শিদাবাদ স্বাভাবিক ভাবেই রক্ত সঙ্কটে পড়েছে। শিবির প্রায় বন্ধই। যত ক্ষণ না শিবির শুরু হচ্ছে, তত ক্ষণ এই সঙ্কট কাটবে না। তাই স্বেচ্ছাসেবী ডোনাররাই ভরসা।’’
তাই সমাজ মাধ্যমের পাতা যেমন ভরে উঠেছে রক্তের আর্জিতে, ভরসা জোগাতে ছুটে যাচ্ছেন রক্তদাতারাও। শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদে ভরে উঠছে মোবাইলের পাতা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন দেখে লালবাগে সুস্মিতাকে বি পজিটিভ রক্ত দিতে ছুটেছেন আলিম হোসাইন। প্রসূতির গর্ভে সন্তানের মৃত্যুর ফলে দ্রুত রক্তের প্রয়োজন ছিল সাফিদা বিবির।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কাতর আর্জি “মহিলার পেটে বাচ্চা মারা গিয়েছে। তাই এমার্জেন্সি রক্তের প্রয়োজন। সিজার হবে মহিলার। রক্তের গ্রুপ এ নেগেটিভ।” রক্ত দিতে এগিয়ে এসেছেন ইকবাল হোসেন। এই ভাবেই সোশ্যাল মিডিয়ার আর্তি দেখেই কখনও লালবাগে দৌড়েছেন সুমন শেখ, আলাউদ্দিন শেখেরা।
জেলা জুড়েই ছুটছেন তাঁরা। একটি সংগঠন সোশ্যাল মিডিয়ায় বহরমপুর ও জিয়াগঞ্জের ৬ জনের মোবাইল নম্বর দিয়ে লিখছেন “মুর্শিদাবাদ জেলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান করতে ও রক্তের প্রয়োজনে ফোন বা হোয়াটসঅ্যাপ করুন।”
কুসুমগাছির হাবিবুল রহমান সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেই গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামের সুমেরা বিবিকে রক্ত দিতে ছুটলেন, অথচ কেউ কাউকে চেনেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে ওঠে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত ৪ বছরের আরিয়ান হোসেনের রক্তের প্রয়োজনের কথা। বাড়ি লালগোলার ছাইতনি। চোখ পড়তেই নয়াগ্রামের বুলেট শেখ বিন্দুমাত্র দেরি করেননি জঙ্গিপুর হাসপাতালে গিয়ে রক্ত দিতে।
একই ভাবে রক্তের আর্জি দেখে রক্ত দিতে ছুটেছেন সুতির গোকুল নগরের নুর আলম শেখ, উমরপুরের সাইদুর রহমান, খোশ মাঝি, গুলজার খান, কুসুমগাছির সাগর ভাইয়েরা। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেলডাঙার দয়ানগরের কিশোরী রিয়া হালদারের হিমোগ্লোবিন নেমে যায় ৬-এ। ছুটে গিয়ে রক্ত দেন সিভিক কর্মী মির্জা চাঁদ।