প্রতীকী চিত্র।
ফরাক্কার গ্রাম পলাশি। পাশাপাশি দুই বাড়িতে করোনায় আক্রান্ত ১৫ জন। আতঙ্কে ভুগছে গোটা গ্রাম। সেই আতঙ্ক কাটাতেই বৃহস্পতি গ্রামে শিবির করে করোনা সংক্রমণের পরীক্ষা করল স্বাস্থ্য দফতর। ২২৫ জনের পরীক্ষার পরে দিনের শেষে করোনা সংক্রমণ মিলল মাত্র এক জনের শরীরে। আইসোলেশনে নিয়ে যাওয়া হল তাকে তৎক্ষণাত।
এই ভাবেই ঘুরে দাঁড়াল করোনা সংক্রমণের শীর্ষে থাকা জেলার দুই ব্লক। করোনার ভয় কাটাতে গ্রামে গ্রামে গিয়ে শিবির করে পরীক্ষা শুরু করেছে শমসেরগঞ্জ ও ফরাক্কা ব্লক। ফলও মিলছে হাতে হাতে। আর তাতেই করোনা সংক্রমিতদের চিহ্নিত করে আলাদা করে ফেলায় জেলার প্রথম দিকে করোনা সংক্রমণের শীর্ষে থাকা এই দুই ব্লকে এখন অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস। শীর্ষ স্থান থেকে পরিস্থিতি সামলে চলে যেতে পেরেছে অনেকটাই নীচের সারিতে।
১৫ জুলাই জেলার মধ্যে সবচেয়ে উপরে ছিল ফরাক্কা। পজ়িটিভের সংখ্যা ছিল ৩৪। শমসেরগঞ্জ ছিল চতুর্থ স্থানে, সংক্রমিত ছিলেন ২৫ জন।
এই মুহূর্তে ফরাক্কা নেমে এসেছে পঞ্চম স্থানে, শমসেরগঞ্জ অষ্টম স্থানে। ফরাক্কায় সংক্রমণের সংখ্যা ৯৬ এবং শমসেরগঞ্জ ৬৯। ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের আশা দু’সপ্তাহের মধ্যে সংক্রমণের হার আরও কমাতে পারবেন তাঁরা।
আবার বিপরীত চিত্রও আছে। যে রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লকে মাত্র ১১ জনের পজ়িটিভ ধরা পড়ে পঞ্চদশ স্থানে ছিল ১৫ জুলাই, সেই রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লক উঠে গিয়েছে জেলায় দ্বিতীয় স্থানে। সংক্রমিতের সংখ্যা ১২৫। রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লক ছিল সপ্তদশ স্থানে, সেই ব্লকের অবস্থান এখন চতুর্থ স্থানে, সংক্রমিত ১০৮ জন। স্বাস্থ্য দফতরের মতে, যে এলাকায় পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা বেশি, মিছিল, সমাবেশের মাত্রা বেশি, সংক্রমণ সেখানে স্বাভাবিক ঘটনা।
শমসেরগঞ্জের ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তারিফ হোসেন বলছেন, “আগে হাসপাতালেই লালারস সংগ্রহ করা হত। তারপরে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার সুবাদে পরীক্ষার গতি বাড়ে হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে ৫০/৬০ জনের বেশি তো পরীক্ষা হয় না। মানুষের মনে করোনা নিয়ে আতঙ্ক রয়েছে। তাঁরা অনেকেই গ্রাম ছেড়ে হাসপাতালে আসতে চাইছেন না। যদি পজ়িটিভ হয় এই ভয়ে। তখনই ঠিক করা হয়, সংক্রমণ বেশি এমন গ্রামে গ্রামে গিয়ে পরীক্ষা করার। তাতেই ফল মিলেছে।’’ যেমন কৃষ্ণনগর গ্রামে ২২৩ জনের পরীক্ষা করে পজিটিভ মিলেছে মাত্র এক জনের। প্রতাপগঞ্জে ৪৮ জনের পরীক্ষা করে এক জনেরও করোনা মেলেনি। কাঞ্চনতলায় ৯২ জনের পরীক্ষা করে পজ়িটিভ মিলেছে মাত্র একজনের। এমনকি যখন সুতি ২ ব্লকের ভাবকীতে শবদাহকে কেন্দ্র করে ১৯ জনের সংক্রমণ ধরা পড়ে তখন গ্রামে গিয়ে আতঙ্কিত গ্রামবাসীদের ভয় কাটাতে ১৩৬ জনের পরীক্ষা করা হয়। পজ়িটিভ মিলেছিল ৬ জনের।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)