Nabadwip Municipality

করোনার ধাক্কায় সাত দিন বন্ধ পুরসভা

গত মঙ্গলবারের আগে পর্যন্ত নদিয়ার অন্য শহরের তুলনায় করোনা সংক্রমণ চোখে পড়ার মতো কম ছিল নবদ্বীপে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০২০ ০০:৪৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

নদিয়ার অন্য সব শহরের তুলনায় সংক্রমণের মাত্রা কম থাকায় প্রস্তাবিত সাত দিনের লকডাউনে নবদ্বীপকে বাদ রাখা হয়েছিল। কিন্তু করোনার ধাক্কায় এ বার সাত দিনের জন্য বন্ধ করে দিতে হল নবদ্বীপ পুরসভা।

Advertisement

গত মঙ্গলবারের আগে পর্যন্ত নদিয়ার অন্য শহরের তুলনায় করোনা সংক্রমণ চোখে পড়ার মতো কম ছিল নবদ্বীপে। কিন্তু পরপর পাঁচ দিনে পাঁচ জনের করোনা ধরা পড়েছে ঘিঞ্জি এই শহরে। সব মিলিয়ে শনিবার পর্যন্ত রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে ১৪ জনের। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, এঁদের মধ্যে এক জন বাদে সকলেরই হয় চিকিৎসা নয় কর্মসূত্রে কলকাতার সঙ্গে যোগ রয়েছে। এ ছাড়া চার জন পরিযায়ী শ্রমিকও আছেন।

শুক্রবার নবদ্বীপ পুরসভার এক গাড়ি চালকের করোনা ধরা পড়ে। তার পরেই পুরসভা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শনিবার জানা যায়, নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের এক নার্সেরও করোনা ধরা পড়েছে।

Advertisement

গত মঙ্গলবার নবদ্বীপের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে বঙ্গপাড়ার এক জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। শহরের কেন্দ্রস্থলে পোড়ামাতলায় তাঁর চশমার দোকান। স্থানীয় সূত্রে প্রশাসন জেনেছে, পরীক্ষা করার জন্য লালারসের নমুনা দেওয়ার পরেও তিনি দোকানে এসেছিলেন। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরিও করেছেন। উপসর্গহীন হওয়ায় তাঁকে প্রথমে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তিনি বেরিয়ে পড়েন প্রাতর্ভ্রমণে। এর পরেই তাঁকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ওই বাজার চত্বর স্যানিটাইজ় করে রবিবার পর্যন্ত তা বন্ধ রাখা হচ্ছে।

বুধবারই ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের এক জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল। সম্প্রতি তিনি চিকিৎসার জন্য শহরের বাইরে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মণীন্দ্র নন্দী রোডের এক বাসিন্দার করোনা ধরা পড়ে। তিনি কলকাতার একটি ওষুধ সংস্থায় কাজ করেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কথা লুকিয়ে মেলামেশা করার অভিযো‌গ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধেও।

এর পরে শুক্রবার পুরসভার এক গাড়ি চালকের সংক্রমিত হওয়ার কথা জানা যায়। তাঁর বাড়ি ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতাপনগর অঞ্চলে। গাড়ির চালক হিসেবে বহু জায়গায় তাঁকে যাতায়াত করতে হয়। নবদ্বীপ পুরসভার ফিন্যান্স অফিসার হুগলির কোন্নগরের বাড়ি থেকে যাতায়াত করেন। সপ্তাহে তিন-চার দিন তাঁকে আনা-নেওয়া করতেন ওই চালকই। গত সোমবার তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। শুক্রবার রাতে তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরে এ দিন সকালে গোটা পুরসভা স্যানিটাইজ় করা হয়। তাঁর প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসা ১৩ জন পুরকর্মী এবং বাড়ির তিন সদস্যেরও লালারস পরীক্ষা করানো হচ্ছে। পুরকর্মীদের আগামী সাত দিন বাড়িতে থাকতে বলা হয়েছে।

নবদ্বীপ হাসপাতালে কর্তব্যরত এক নার্সের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তাঁর বাপের বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত দু’সপ্তাহ কল্যাণীর কার্নিভাল কোভিড হাসপাতালে কাজ করছিলেন তিনি। গত সোমবার সেখান থেকে ফিরে সরাসরি নবদ্বীপ হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করাতে দেন তিনি। কোনও উপসর্গ না থাকায় আপাতত তিনি হাসপাতালের আবাসনেই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement