Election

ভোটের প্রচার থামতেই সম্বল করোনা-প্রচার

কিন্তু করোনার গুঁতোয় ঘায়েল এখন করোনা আঁকড়েই মাঠে থাকতে চাইছে রাজনৈতিক দলগুলি।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৫:২৭
Share:

ফাইল চিত্র

পুরভোট আপাতত স্থগিত। ফলে তা সামনে রেখে যে প্রচার চলছিল, তা-ও সোমবার থেকে স্তিমিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ‘বাংলার গর্ব মমতা’র মতো যে সব পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি রয়েছে, সেগুলির কী ক্ষেত্রে কী হবে তা জানার অপেক্ষায় রয়েছে জেলা তৃণমূল।

Advertisement

কিন্তু করোনার গুঁতোয় ঘায়েল এখন করোনা আঁকড়েই মাঠে থাকতে চাইছে রাজনৈতিক দলগুলি। পুরসভা ভোটের বড় সভা-সমাবেশ বন্ধ হয়ে গেলেও কর্মসূচি পুরোপুরি বন্ধ রাখতে কার্যত কেউই রাজি নয়। সে জন্য এ বার করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করার উপলক্ষেই স্থানীয় স্তরে ছোট-ছোট জনসংযোগের কাজ চালিয়ে যাওয়ার পন্থা নিচ্ছে তারা— তৃণমূল, বিজেপি, বাম সকলেই।

সিপিএম তথা বামফ্রন্ট সোমবারই তাদের দুটো বড় কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছে। বিজেপির এমনিতেই কোনও বড়সড় কর্মসূচি ছিল না যেখানে বহু মানুষের সমাগম হতে পারে। কিন্তু তৃণমূল নেতাকর্মীরা এখনও ধন্দে। কারণ আগামী ২০ মার্চ থেকে শুরু হওয়ার কথা ‘বাংলার গর্ব মমতা’-র দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি। তার মধ্যে আছে ‘বঙ্গধ্বনি যাত্রা’। তাতে মিছিল বার করার পাশাপাশি কোনও ধর্মীয় স্থানে গিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে হবে। আগামী ২০ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ১৫ দিন ধরে তা চলার কথা। প্রথম পর্যায়ের কর্মসূচি শেষ হয়েছে ১৫ মার্চ। এ ছাড়া রয়েছে ‘সংহতি যাত্রা’। আগামী ১৪ এপ্রিল তফসিলি জাতি অধ্যুষিত এলাকায় বাসিন্দাদের সঙ্গে সভা করার কথা নেতাদের। ১৯ এপ্রিল তফসিলি জনজাতি-প্রধান বিধানসভা এলাকাতেও একই ভাবে সভা হওয়ার কথা।

Advertisement

তৃণমূলের এই সব কর্মসূচিতে বড় লোকসমাগম হবেই। ফলে ধন্দে পড়ে গিয়েছেন জেলা নেতাদের অনেকেই। এক বিধায়কের কথায়, “উভয় সঙ্কটে পড়েছি আমরা। সর্বোচ্চ নেতৃত্বের তৈরি করে দেওয়া কর্মসূচি তো তাঁদের নির্দেশ ছাড়া বন্ধ করাও যায় না! তবে আমাদের ধারণা, শেষ পর্যন্ত কর্মসূচি স্থগিত হয়ে যেতে পারে।” ১৫ থেকে ২০— এই মাঝের পাঁচ দিন তৃণমূল নেতারা স্থানীয় স্তরে কোনও কর্মসূচি নেননি। দ্বিতীয় পর্যায়ের কর্মসূচি বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সাংগঠনিক পরিকল্পনা করেছেন। দলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহ বলেন, “এ ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব যা নির্দেশ দেবেন, সেই মতোই পদক্ষেপ করা হবে।”

বিজেপির আপাতত পুরভোটের কথা মাথায় রেখেই ওয়ার্ডভিত্তিক ছোট-ছোট কর্মিবৈঠক করছে। তাদের দাবি, সেই সব বৈঠকে ১০ থেকে ১৫ জন করে থাকছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে কর্মীদের সচেতন করা হচ্ছে বলে জেলা নেতাদের দাবি। দলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক চক্রবর্তী বলছেন, “করোনার কারণেই আমরা এখন বড় কর্মসূচি নিচ্ছি না। দলের তরফে করোনা নিয়ে কর্মসূচি নিচ্ছি। আমাদের কর্মীরা গিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করবেন।”

আগামী ২২ মার্চ চাকদহ ও কল্যাণীতে মহম্মদ সেলিমকে এনে ‘নাগরিক কনভেনশন’ করার কর্মসূচি নিয়েছিল সিপিএম। পরের দিন আবার কৃষ্ণনগর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে ভগৎ সিংহের ‘আত্মবলিদান দিবস’ পালনের কর্মসূচি ছিল বামফ্রন্টের। দুটো কর্মসূচিই বাতিল করে দিয়েছে তারা। তার বদলে সিপিএম সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দলের কর্মীরা ছোট-ছোট দলে ভাগ হয়ে বাড়ি-বাড়ি যাবেন। জনবহুল এলাকায় গিয়ে করোনা নিয়ে প্রচার করবেন। বিলি করা হবে লিফলেট। দলের জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “জনসমাবেশ করব না বলেই আমরা কর্মসূচি বাতিল করে দিয়েছি। তবে আমাদের কর্মীরা করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে প্রচার চালিয়ে যাবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement