Mid day Meal

মিড-ডে মিলে বরাদ্দ টাকার ভাগেই বিতর্ক

প্রাথমিক ও হাইস্কুল মিলিয়ে ৪১টি স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নার সামগ্রী কেনার জন্য ছয় লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা পুরসভাকে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৫৫
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মিড-ডে মিলের জন্য ৪১টি স্কুলের টাকা পাঠানো হলেও সেই টাকা শহরের সমস্ত স্কুলের মধ্যে বণ্টন করে বিতর্কের মুখে পড়েছে কৃষ্ণনগর পুরসভা। রান্নার সামগ্রী কেনার জন্য সরকারি ভাবে ওই র্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। কিন্তু সেই টাকা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিকে পুরোপুরি না দিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ অন্যান্য স্কুলের মধ্যে ভাগ করে দেন। পরে বাকি টাকা পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে দেওয়া হয়েছে। কেন বরাদ্দ টাকা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিকে না দিয়ে ভাগ করে দেওয়া হল তা নিয়ে শিক্ষক মহলের একাংশে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এতে সরকারি নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে বলেই তাদের দাবি।

Advertisement

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর শহরে মোট ৯০টি স্কুল আছে। তার মধ্যে ৬৪টি প্রাথমিক স্কুল ও ২৬টি হাইস্কুল। প্রাথমিক ও হাইস্কুল মিলিয়ে ৪১টি স্কুলের মিড-ডে মিলের রান্নার সামগ্রী কেনার জন্য ছয় লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা পুরসভাকে দেওয়া হয়। পড়ুয়ার সংখ্যা অনুয়ায়ী স্কুলগুলির জন্য সেই টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। ৫০ থেকে ২৫০ জন পড়ুয়া অনুযায়ী ১০, ১৫ ও ২০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। পুসভার দায়িত্ব ছিল, বরাদ্দ অনুযায়ী সেই টাকা সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া। কিন্তু টাকা হাতে পাওয়ার পর তারা পুরো টাকা তালিকায় থাকা ৪১টি স্কুলকে না দিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা অনুযায়ী ৯০টি স্কুলের মধ্যে বণ্টন করে দেয়।

কিন্তু কেন এমনটা করা হল? কেন পুরসভা সরকারি নির্দেশ না মেনে সব স্কুলের মধ্যে টাকা ভাগ করে দিল?

Advertisement

কৃষ্ণনগর পুরসভার মিড-ডে মিলের দফতরের আধিকারিক সুজয় হালদারের যুক্তি, “আমাদের কাছে গত বছরের বরাদ্দ টাকায় কেনা প্রচুর হাঁড়ি, কড়াই ও ডেকচি ছিল। প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা সেই সব সামগ্রী আগেই স্কুলগুলিকে দিয়েছিলাম। ফলে বেশির ভাগ স্কুলেরই রান্নার জন্য হাতা, বালতির মতো ছোটখাটো সামগ্রীর প্রয়োজন ছিল।” তিনি বলেন, “যে সমস্ত স্কুলের জন্য এ বার অর্থ বরাদ্দ হয়নি তাদের অনেকের আবার এই সমস্ত সামগ্রী কেনার প্রয়োজন ছিল। জানুয়ারি থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। স্কুলগুলি আমাদের সঙ্গে টাকার জন্য যোগাযোগ করছিল। তাই টাকাটা সবার মধ্যে ভাগ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।” তাঁরা ঠিক করেছিলেন, পরের পর্যায়ে আবার বাকি স্কুলগুলির জন্য টাকা এলে সেটাও ভাগ করে দেওয়া হবে, তা হলেই সব স্কুল নিজের নিজের ভাগের টাকা পেয়ে যাবে, সকলের প্রয়োজনও মিটে যাবে।

তবে বিষয়টি ভাল ভাবে নিচ্ছেন না অনেক শিক্ষকই। বিশেষ করে তৃণমূলের শিক্ষা সেলের নেতৃত্বের একাংশ এই নিয়ে সরব হয়েছেন। প্রশাসনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রশ্ন তোলা হয়েছে, কী ভাবে পুরসভা এমনটা করল? পুরসভা কি নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে এক স্কুলের টাকা অন্য স্কুলের মধ্যে ভাগ করে দিতে পারে?

নদিয়া জেলা তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দিলীপ সিংহের দাবি, “একটা স্কুলের জন্য বরাদ্দ টাকা অন্য স্কুলকে দেওয়া যায় না। পুরসভার এই এক্তিয়ারই নেই। আমরা বিষয়টা নজরে না আনলে অনিয়মটা থেকেই যেত। ভবিষ্যতে যাতে এমনটা না হয়, সে দিকে নজর রাখা হবে।” কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান, তৃণমূলের রীতা দাস বলেন, “নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হচ্ছে। সব স্কুলেরই রান্নার সামগ্রী প্রয়োজন। অথচ সকলের টাকা আসেনি বলেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এতে অনিয়মের প্রশ্নই ওঠে না। তা ছাড়া পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে বাকি টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement