শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে সমিতি গড়ল ঠিকাদারেরা

বদর আলিও গাজিয়াবাদে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়েই পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝির দায়ে চোর সন্দেহে সেখানে তার হেনস্থা কম হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলডাঙা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৩৭
Share:

চেন্নাইয়ে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়ে গিয়েছিল আসগর আলি। দিনান্তে কাজ শেষে নির্মিয়মাণ সেই বহুতলের মেঝেতেই সার দিয়ে শুয়েছিল সকলে। কিন্তু সে ঘুম আর ভাঙেনি আসগরের। মাসান্তে কাপাসডাঙার গ্রামের বাড়িতে টাকা পাঠানোর বদলে ফিরেছিল তার নিষ্প্রাণ দেহ।

Advertisement

বদর আলিও গাজিয়াবাদে রাজমিস্ত্রির কাজ নিয়েই পাড়ি দিয়েছিল। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝির দায়ে চোর সন্দেহে সেখানে তার হেনস্থা কম হয়নি।

মাঠের কাজ ফুরিয়ে গেলে গাঁ গঞ্জে আর কাজ কোথায়! রুজির টানে তাই বেলডাঙা আর তাকে জড়িয়ে থাকা আশপাশের শক্তিপুর, হরেকনগর, রেজিনগরের মানুষ ফি বছর পাড়ি দেয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে— কেরল, তামিলনাড়ু কেউ বা উত্তরপ্রদেশ।

Advertisement

কখনও দুর্ঘটনা কখনও বা অসুস্থতায় মারা গেলেও ক্ষতিপূরণের বদলে ফিরে আসে তাদের দেহ।

এ ভাবেই চলছিল অসংগঠিত শ্রমিকদের রুজি-রুটি, দিনযাপন। সেই বঞ্চনায় দাঁড়ি টানতেই তাই, সমিতি গড়ল এলাকার শ্রমিক-ঠিকাদারেরা।

কন্ট্রাক্টর ওয়েলফেয়ার সমিতির উদ্যোগে সেই সব না-পাওয়ার ঘটনা রোখার পাশাপাশি স্থানীয় ঠিকাদারদেরও যাতে অযথা হয়রান হতে না হয়, দেখা হবে সে বিষয়টিও।

হয়রান? উদাহরণ রয়েছে তারও, বেলডাঙার হরেকনগরের পরিচিত ঠিকাদার বজলুর রহমানের বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা তার উদাহরণ। উত্তরপ্রদেশের ভিনায় কাজ করতে গিয়ে এক সময় কাউকে না জানিয়েই স্থানীয় দুই যুবক চলে গিয়েছিল দিল্লি। বাড়ির লোক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে চড়াও হয়েছিল বজলুরের বাড়িতে।

ওই সমিতির সম্পাদক ইসমাইল মল্লিক বলেন, ‘‘পাওনা গন্ডা নিয়ে গন্ডগোলের জের অনেক সময়েই ঠিকাদারকে পোহাতে হয়। কিন্তু ঠিকাদার তো কাজটা পাইয়ে দেওয়ার বাইরে কিছু করতে পারেন না। শ্রমিকরা না বুঝে তাদের উপরেই চড়াও হয়।’’ তবে এখন ঠিকাদারদের পাশাপাশি, শ্রমিক স্বার্থেও কাজ করবে ওই সমিতি।

সমিতির উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য মনিরুল হক। তিনি বলেন, ‘‘দেশে ও বিদেশে কাজ করতে গিয়ে শ্রমিক ও ঠিকাদাররা নানা সমস্যায় পরেন। অর্থ নেলদেন সংক্রান্ত সমস্যা, শ্রমিকের মৃত্যু হলে সমস্যার শেষ থাকেনা। সেই সমস্যা মোকাবিলায় একটা মিতি গঠন করার খুবর দরকার ছিল।’’

বেলডাঙা ১ ব্লকের অন্তত বিশ হাজার শ্রমিক বাইরে কাজ করেন, ঠিকাদরদের সংখ্যাও প্রায় বারোশো।

সমিতির নজরদারিতে এ বার সেই সমস্য়া কিছুটা মিটবে বলেই মনে করছেন শ্রমিক-ঠিকাদার দু’পক্ষই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement