প্রতীকী ছবি।
নাগরিকপঞ্জিকরণ ইস্যু ও নয়া নাগরিকত্ব আইনের আতঙ্কে রাজ্য জুড়ে অন্য নথির সঙ্গে আধার কার্ড সংশোধন বা নতুন আধার কার্ড তৈরির জন্য হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। আধার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের জন্য জেলা জুড়ে পোস্ট অফিসগুলির সামনেও সে সময় লম্বা লাইন পড়েছিল। কিন্তু লকডাউনের সময় থেকে থমকে গিয়েছে আধার কার্ড তৈরি বা সংশোধনের কাজ। যার জেরে সমস্যায় পড়েছেন জেলার বাসিন্দারা। ফের কবে শুরু হবে আধার কার্ডের কাজ সেদিকেই তাকিয়ে মুর্শিদাবাদের বাসিন্দারা। তবে ডাক বিভাগের মুর্শিদাবাদের সুপারিন্টেন্ডেন্ট প্রবাল বাগচী বলেন, ‘‘ফের কবে থেকে আধার কার্ডের কাজ শুরু হবে তার দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। তবে শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে আমরা আশাবাদী।’’
হরিহরপাড়া রুকুনপুরের আয়েষা পারভিন হরিহরপাড়া ডাকঘরের সামনে লাইন দিয়ে আধার কার্ডে নামের বানান সংশোধনের জন্য কুপন পেয়েছিলেন। জুলাই মাসে তাঁর সংশোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনের জেরে আধার কার্ডের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তিনি আর তাঁর আধার কার্ডের নামের বানান সংশোধন করাতে পারেননি। আয়েষা বলেন, ‘‘আধার কার্ডের নামের বানান ভুল থাকায় ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারিনি। কবে সংশোধন হবে সেই অপেক্ষায় আছি।’’ আয়েষার মতো মুর্শিদাবাদের অনেকেরই আধার কার্ডের সংশোধন বা নতুন করে হয়নি।
লালগোলার কৃষ্ণপুরের বুলবুল শেখ বলেন, ‘‘ডাকঘরে লাইন দিয়ে কুপন পেয়েছিলাম। কিন্তু কাজ বন্ধ থাকার কারণে আধার কার্ড করাতে পারিনি। ফের কবে আধার কার্ডের কাজ শুরু হবে সেদিকে তাকিয়ে আছি।’’
ডাক বিভাগ সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে প্রায় ৩০টি ডাকঘরে আধারকার্ডের সংশোধন এবং নতুন আধার কার্ড তৈরির কাজ চলছিল। গত বছর অক্টোবর-নভেম্বর মাস থেকে ডাকঘরগুলির সামনে ভিড় উপচে পড়ছিল। কবে আধার কার্ডের কাজ করে দেওয়া হবে তার দিন নিতেই এই ধরনের লম্বা লাইন পড়ছিল। অনেকেই রাত জেগে ২৫-৩০ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের হাতে কুপন দিয়ে কবে আসতে হবে তা জানানো হচ্ছিল। সেই মতো আধার কার্ডের কাজও হচ্ছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখনও সেই কাজ শুরু হয়নি। যার জেরে এই সময়ের মধ্যে যাঁদের আধার কার্ড তৈরির দিন দেওয়া হয়েছিল তাঁদের কাজ হয়নি।
ডাক বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ডাক বিভাগের যাঁরা আধার কার্ড তৈরির কাজ করেন তাঁদের মেশিনে বায়োমেট্রিক ছাপ লাগে। তেমনই যাঁর আধার কার্ড তৈরি হবে বা সংশোধন করা হবে তাঁরও মেশিনে বায়োমেট্রিক ছাপ লাগে। কিন্তু বায়োমেট্রিক ছাপের কারণে কিংবা ভিড় হওয়ার কারণে সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকে আধার কার্ডের কাজ বন্ধ করা হয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘তবে যাঁদের কুপন দেওয়া হয়েছে তাঁদের নাম, মোবাইল নম্বর নেওয়া আছে। ফের কাজ শুরু হলে তাঁদের ফোন করে ডাকা হবে।’’