—প্রতীকী চিত্র।
চলতি সপ্তাহে পুরোদমে চালু হতে চলেছে কল্যাণী এইমস হাসপাতালের পরিষেবা। অথচ দু’বছর কেটে গেলেও কল্যাণীতে বিমানবন্দরের জন্য জমিজট কাটল না। জট কাটানো নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলছেন রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার। পাল্টা জেলা প্রশাসনের তরফে 'বিমানবন্দরের জন্য জমির' বিষয়টি তাদের জানা নেই বলে দাবি করা হয়েছে। জমিজট কাটিয়ে বিধানচন্দ্র রায়ের স্বপ্নের উপ-নগরীতে রাজ্যের পঞ্চম বিমানবন্দর কবে হবে? লোকসভা নির্বাচনের আগে সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে নানা মহলে।
সূত্রের খবর, বিমানবন্দরের জন্য কল্যাণীতে বছর দুয়েক আগে জমি চিহ্নিতকরণের কাজ প্রাথমিক পর্বে শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। সেই সময় ভাঙরে বিমানবন্দরের জন্য যে জমি চিহ্নিত হয়েছিলপরবর্তীতে সেখানে বিমানবন্দর করা নিয়ে একমত হতে পারেননি প্রশাসনের কর্তারা। যে কারণে বেছে নেওয়া হয় কল্যাণীকে। বিমানবন্দরের জন্য প্রয়োজন প্রায় সাড়ে তিন হাজার একর জমি। এছাড়াও আনুষঙ্গিক পরিকাঠামোর জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত জমি। আবার কলকাতা থেকে কল্যাণীর দূরত্ব সড়কপথে প্রায় ৫০ কিলোমিটার। একদিকে ভৌগোলিক গুরুত্ব এবং অপরদিকে রাজ্যের একমাত্র এইমস কল্যাণীতে হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই গুরুত্ব পায় এখানে বিমানবন্দর গড়ে তোলার বিষয়টি।
কিন্তু বিমানবন্দরের জন্য জমি চিহ্নিতকরণের কাজ কতটা এগিয়েছে? বিষয়টি নিয়ে নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি সংস্কার) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, "অল্পদিন হয়েছে আমি দায়িত্বে এসেছি। বিষয়টি কী অবস্থায় রয়েছে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।" কল্যাণীর মহকুমা শাসক অভিজিৎ সামন্তও ‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছেন’ বলে মন্তব্য করেছেন।
নদিয়া জেলার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির সরাসরি রেল যোগাযোগ নেই। তাই কল্যাণী এইমসে চিকিৎসা করানোর জন্য মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের মত জেলাগুলো থেকে রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনদের হয় সড়কপথে, না হয় রেলপথে হাওড়া বা শিয়ালদহ হয়ে কল্যাণী পৌঁছাতে হয়। স্বাভাবিক ভাবেই কল্যাণীতে একটি বিমানবন্দর তৈরির দাবি উঠছে সব মহলে। আবার আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এইমসে চালু হচ্ছে ইনডোর পরিষেবা।
কল্যাণী এইমস হাসপাতালের জন্য বিমানবন্দর কতটা গুরুত্বপূর্ণ? কল্যাণী এইমসের কার্যনির্বাহী অধিকর্তা রামজি সিং বলেন, "অবশ্যই এখানে এয়ারপোর্ট গড়ে তোলা গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হলে রোগীদের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নামজাদা চিকিৎসকেরাও এখানে আসতে পারবেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পড়ুয়া চিকিৎসকেদের জন্যেও যাতায়াত সহজ হবে।"
আবার রানাঘাটের সাংসদ বিজেপির জগন্নাথ সরকার বলেন, "বিমানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। রাজ্য জমি দিলেই কল্যাণীতে বিমানবন্দর তৈরি করবে কেন্দ্র।" পাল্টা হিসেবে রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, "কেন্দ্রের বড় কোনও প্রকল্প আজ পর্যন্ত রানাঘাট লোকসভার জন্য নিয়ে আসতে পারেননি সাংসদ। তিনি চাইলেই তো আর এয়ারপোর্ট হবে না।" মন্ত্রীর যুক্তি "কল্যাণী থেকে দমদম বিমানবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। তাই এত স্বল্প দূরত্বে নতুন বিমানবন্দরের প্রয়োজন নেই।"