প্রস্তুতি: শুরু হল ম্যারাপ বাঁধা। ডোমকলে। নিজস্ব চিত্র
রাতারাতি বহরমপুর থেকে ডোমকলে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে উঠে গিয়েছে প্রশ্নও, কেন এই স্থানবদল?
শুক্রবার সন্ধ্যায় ঝ়ড়জল মাথায় করে ডোমকলে চলে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার। বহরমপুর স্টেডিয়ামে ম্যারাপ খুলে রাতে ডোমকল স্পোর্টস কমপেক্স মাঠে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বাঁশ-খুঁটি। তাঁবু গাড়েন মণ্ডপ কর্মীরা। শনিবারও জেলা প্রশাসনের একাধিক কর্তা এসে ঘুরে গিয়েছেন ডোমকলের বিভিন্ন মাঠ। সভাস্থলের পাশে তো বটেই, হেলিপ্যাডের জন্য তৈরি রাখা হচ্ছে আরও দু’টি মাঠ। তবে আগামী ১৩ এপ্রিল জেলার প্রশাসনিক বৈঠক বহরমপুর রবীন্দ্রসদনেই হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।
কেন এই জায়গা বদল?
প্রশাসনের তরফে কোনও স্পষ্ট জবাব মেলেনি। তবে তৃণমূলের দাবি, উন্নয়নের বার্তা দিতেই জেলাসদরের বদলে সীমান্ত ঘেঁষা ডোমকলকে বেছে নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যা মানতে নারাজ বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, পুরোটাই করা হচ্ছে ভোটের কথা মাথায় রেখে। আগামী ১৪ মে ডোমকলে পুরভোট হওয়ার কথা। তার আগে কর্মীদের চাঙ্গা করতে আর সাধারণ মানুষকে ঝুড়ি-ঝুড়ি প্রতিশ্রুতি দিতেই এখানে আসছেন মমতা।
জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু তাহের খান বলেন, ‘‘সদ্য তৈরি হওয়া একটা ছোট্ট পুরসভার নির্বাচনের জন্য মূখ্যমন্ত্রীকে জেলাসদরের সভা বাতিল করে ডোমকলে আসতে হচ্ছে, এটাই লজ্জার। এতেই পরিষ্কার, ডোমকল নিয়ে তৃণমূল কতটা আতঙ্কিত।’’
গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বাড়বাড়ন্তের মধ্যেও ডোমকল নিজের দখলে রেখেছিল সিপিএম। কিন্তু পরে তৃণমূল ক্রমশ প্রভাব বাড়িয়েছে। এখন মহকুমার সব গ্রাম পঞ্চায়েতই তাদের দখলে। পুরসভাও তারা দখল করতে চাইবে, তা বলাই বাহুল্য। কংগ্রেস আর সিপিএম নিজেদের অস্তিত্ব রাখতে তারা মরিয়া। রাজ্যে তাদের জোট ব্যর্থ হলেও তাই ডোমকল পুরভোটে জোট বজায় রেখেছে কংগ্রেস-সিপিএম।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যে সরকার নিজে থেকেই ডোমকলে পুরভোটের প্রস্তাব দিয়েছে, তাদের মূখ্যমন্ত্রী ভোটের ঘণ্টা বাজিয়ে সেই এলাকায় সরকারি সভা করতে যাচ্ছেন, এটা লজ্জার। আদতে পুলিশ এবং প্রশাসনের উপরে চাপ বাড়াতেই এভাবে বহরমপুর থেকে ম্যারাপ খুলে রাতারাতি ডোমকলে সভা করা হচ্ছে।’’
যুব তৃণমূল নেতা সৌমিক হোসেন পাল্টা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এলে যে এই জেলা উন্নয়নের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে যাবে, বিরোধীদের গাক্রদাহের কারণ এটাই। মূখ্যমন্ত্রী কোথায় সভা করবেন, সেটা ঠিক করবে সরকার। সিপিএম-কংগ্রেসের কথায় তো আর সভাস্থল ঠিক হবে না!’’