Murshidabad Unrest

‘টাকা দিয়ে কী হবে! গ্রামে পুলিশ ক্যাম্প হোক, দোষীরা শাস্তি পাক’, বলছে ধুলিয়ানে নিহতদের পরিবার

বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শমসেরগঞ্জে হিংসায় নিহত তিন জনের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ২২:২৯
Share:
আর্থিক সাহায্য ফিরিয়ে দিল একটি পরিবার।

আর্থিক সাহায্য ফিরিয়ে দিল একটি পরিবার। — নিজস্ব চিত্র।

হিংসার পর থেকে আতঙ্কে ঘরছাড়া ক্ষৌরকার। ভয়ে সিঁটিয়ে পুরোহিত। শুধু মাত্র কীর্তন দল দিয়ে স্বামী হরগোবিন্দ দাস এবং পুত্র চন্দন দাসের নিয়মরক্ষার পারলৌকিক কর্ম সেরে প্রতিবেশীদের কাছে শুনেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের পরিবারের জন্য ঘোষণা করেছেন ১০ লক্ষের ক্ষতিপূরণ। বুধবার বিকেলে সেই খবর শোনার পরে আঁচলের খুঁট দিয়ে চোখ মুছে হরগোবিন্দের স্ত্রী পারুল দাস বললেন ‘‘টাকা দিয়ে কী হবে? আমরা চাই কঠিন শাস্তি হোক দোষীদের।’’ পারুলের পুত্রবধূ পিঙ্কিও রাজ্য সরকারের ঘোষিত ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ গ্রহণে ইচ্ছুক নন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘এলাকার মানুষের মনে আস্থা ফেরাতে গ্রামে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প করুক সরকার।’’

Advertisement

বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শমসেরগঞ্জে হিংসায় নিহত তিন জনের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে সরকারি সহায়তা দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। তার পরেই হরগোবিন্দ ও চন্দনের পরিবার জানিয়ে দিয়েছে, তারা ক্ষতিপূরণ চায় না। গত শুক্রবারের সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে চন্দনের স্ত্রী বুধবার বলেন, ‘‘সে দিন পুলিশ সময় মতো এলে শ্বশুর এবং স্বামীকে হারাতে হত না।’’

বুধবার ছিল হরগোবিন্দ ও তাঁর পুত্র চন্দনের আদ্যশ্রাদ্ধ। পরিবারের সদস্যেরা জানাচ্ছেন, শ্রাদ্ধের কাজ করার জন্য কোনও পুরোহিত ও ক্ষৌরকারকে পাননি তাঁরা। শেষ পর্যন্ত ক্ষৌরকার ও পুরোহিত ছাড়াই সম্পন্ন হয় পারলৌকিক কাজ। এগিয়ে আসেন স্থানীয় কীর্তনের দলের সদস্যরা। কীর্তনের মধ্যে দিয়েই আদ্যশ্রাদ্ধ সম্পন্ন করে পরিবার। প্রসঙ্গত, জাফরাবাদে পিতা-পুত্রের খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে মুর্শিদাবাদের সুতি ও বীরভূমের মুরারই থানা এলাকা থেকে ইতিমধ্যেই দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

শুক্রবারের অশান্তিতে সুতি এলাকায় গুলিতে নিহত হন ইজাজ আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। রাজ‍্য প্রশাসন ও শাসক তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, ওই মৃত‍্যু বিএসএফের গুলিতে হয়েছে। মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়ও একই কথা বলেছেন। বহরমপুরের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এক জন পরিযায়ী শ্রমিক গুলি খেয়ে মারা গিয়েছেন। এমন কত পরিযায়ী শ্রমিক বাইরে পড়ে আছেন। মুর্শিদাবাদের বদনাম যদি বাইরে হয়, তা হলে এই জেলার যে সমস্ত যুবক বাইরে কাজ করছেন তাঁদের অসুবিধা হবে। সেই কথাও ভাবতে হবে। তাই প্রশাসন নড়েচড়ে বসুক।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement