এই নির্মাণ নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। ছবি:অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।
পুর এলাকায় নিকাশি নালা তৈরি হচ্ছিল। পরিদর্শনে গিয়ে সেই কাজের গুণগত মান নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। তার জেরে ঠিকাদারের লোকজনের হাতে নিগৃহীত হলেন জঙ্গিপুর পুরসভার এক বাস্তুকার। ঘটনা নিয়ে পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারের কাছে অভিযোগ জানান তিনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে জঙ্গিপুর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফাঁসিতলায় ঘটনাটি ঘটে। যদিও ঠিকাদারের পাল্টা অভিযোগ, এই কাজের বরাত পাওয়ার জন্য তাঁর কাছ থেকে নাকি কয়েক লক্ষ টাকা কাটমানি নিয়েছেন প্রত্যয় পোদ্দার নামে ওই বাস্তুকার।
এ দিন ফাঁসিতলায় নিকাশি নালা তৈরির কাজ চলছিল। স্থানীয় সূত্রে খবর, সেখানেই পরিদর্শনে গিয়েছিলেন ওই বাস্তুকার। তিনি কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তুললে ঠিকাদারের কর্মীরা তাঁর সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এরপর এক সময় শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। খবর পেয়ে সেখানে যান ওই ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির স্বামী তথা তৃণমূলের জঙ্গিপুর জেলার সহকারী সভাপতি বিকাশ নন্দ। তিনি দু’পক্ষকে সরিয়ে দেন। ওই কাজের ঠিকাদারের অভিযোগ, কাজের বরাত পাওয়ার জন্য প্রত্যয় পোদ্দার নামে ওই বাস্তুকার সাড়ে তিন লক্ষ টাকা ‘কাটমানি’ নিয়েছেন তাঁর কাছ থেকে।
তিনি বলেন, ‘‘আরও দেড় লক্ষ টাকা চাইতে তিনি এ দিন ঘটনাস্থলে আসেন। টাকা দিতে আপত্তি করায় তিনি কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।’’
তবে বিকাশ বলেন, “৪৪ লক্ষ টাকার দু’টি নিকাশি নালার কাজ চলছে ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে। ইতিমধ্যে ১৭ লক্ষ টাকার একটি কাজ শেষ হয়েছে। তার টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দু’দিন আগে দ্বিতীয় কাজটি কাউকে না জানিয়েই শুরু করে দেন ওই ঠিকাদার।এ নিয়ে আমি আপত্তি করি। তাঁকে বলি, বাস্তুকারকে কাজ শুরুর কথা যেন তিনি জানান। আজ নির্মাণস্থলে আমিই ডেকে পাঠাই বাস্তুকারকে। তিনি আসতেই কাজের মান নিয়ে আপত্তি তোলেন। তারপরেই দু’পক্ষে হাতাহাতি বেধে যায়।”
অন্যদিকে, পুর বাস্তুকার প্রত্যয় পোদ্দার বলেন, “কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এ দিন কাজের জায়গায় গিয়ে দেখি, নিকাশি নালা হচ্ছে। দেখি, সিমেন্টের ভাগ কম দেওয়া হয়েছে। ২ নম্বর ইট দিয়ে কাজ হচ্ছে। এই এলাকার নিকাশি নালাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ ভাবে কাজ চললে যে কোনও সময় নালা ভেঙে পড়বে। তাই ঠিকাদারের লোকজনকে নিয়ম মেনে উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করতে বলি। তাতেই ওরা আমার উপর চড়াও হয়। আমাকে মারার জন্য বাঁশও আনা হয়েছিল। তা দেখে আমি কোনওরকমে ঘটনাস্থল থেকে
পালিয়ে বাঁচি।”
এরপরই পুরসভায় যান বাস্তুকার এবং বিকাশবাবু। পুরপ্রধান ও উপপ্রধান কলকাতায় রয়েছেন। তাই ওই ঠিকাদার জঙ্গিপুর পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসারের কাছে লিখিত ভাবে তাঁকে হেনস্থার অভিযোগ জমা দিয়েছেন।