দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে কোনও রদবদল হল না। — ফাইল চিত্র।
সাগরদিঘির উপনির্বাচনে তৃণমূলের পরাজয়ের পরে জেলায় দলের সাংগঠনিক পরিবর্তনের কথা উঠেছিল। শুক্রবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকে সেই রদবদল হতে পারত বলে গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তেমন কোনও খবর মেলেনি। তবে নবগ্রামের বিধায়ক তথা দলের জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান তৃণমূলের কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে এ জেলায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ সাগরদিঘির উপনির্বাচনের ফলাফলে দেখা গিয়েছে সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের অনেক কমেছে। সে জন্যই সিদ্দিকুল্লাকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হল কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।
সাগরদিঘির পরাজয়ের কারণ খতিয়ে দেখতে সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তৃণমূল সূত্রে খবর, সেই কমিটি অবশ্য সংখ্যালঘু ভোট হারানোর কথা সরাসরি স্বীকার করেনি। সাগরদিঘিতে পরাজয়ের জন্য প্রার্থী বাছাই সহ প্রায় ২৫টি কারণ তারা উল্লেখ করে। যদিও মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল সংখ্যালঘু শাখার সভাপতি নাজিমুদ্দিন মণ্ডল গত সপ্তাহে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “সংখ্যালঘুদের ক্ষোভ বাড়ছে। সাগরদিঘিতে তৃণমূলের পরাজয় তার সূত্রপাত। এ অবস্থা যদি চলতে থাকে তবে পঞ্চায়েতেও সাগরদিঘির হাল হবে।” একই ভাবে তৃণমূল সমর্থক সারা বাংলা ইমাম মুয়াজ্জিন সংগঠনও সতর্ক করেছে রাজ্য সরকারকে।
সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক নিজামুদ্দিন শেখের মতে, সাগরদিঘিতে যা ঘটেছে নানা কারণে তা সংখ্যালঘুদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। দেড় বছরে প্রায় ৭৪ হাজার ভোট সাগরদিঘিতে হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের, যার বেশির ভাগটাই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, “সাগরদিঘির উপ নির্বাচনে প্রায় ৪২ জন নেতা ও মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়ে দেখেছেন মাননীয়া। তাতে কাজ হয়নি।’’ জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন, “মমতাদেবী তো বার বার বলেছেন প্রার্থী তিনি নিজে। তা হলে পরাজয়ের দায় তিনি নেবেন না কেন?” জঙ্গিপুরের তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “দলনেত্রী যাঁকে দায়িত্ব দিয়েছেন দলের ভালর জন্যই দিয়েছেন। এ নিয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য করা সাজে না। আমরা তাঁকে পেয়ে এক সঙ্গে কাজ করতে পারব।”