Ganga Erosion

গঙ্গা ভাঙন রুখতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ শুরু, বরাদ্দ ১৩ কোটি টাকা

কল্যাণী ব্লকের তারিনিপুর, কালীপুর, গঙ্গা মনোহরপুর, চর যাত্রাসিদ্ধি, সরাটি ও রায়ডাঙা এলাকার ৩৪৩৭ মিটার ভাঙন এলাকার জন্য নদীপারে বাঁধ দেওয়ার কাজ অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় সরকার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ২৩:৪২
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

ভাগীরথীর ভাঙ্গন রোধে বড়সড় পদক্ষেপ গ্রহণ করল কেন্দ্রীয় সরকার। ভাগীরথীর নদিয়া অংশের প্রায় তিন কিলোমিটার নদী বাঁধ নির্মাণ করার প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় জলসম্পদ মন্ত্রক থেকে ইতিমধ্যে বরাদ্দ হয়েছে ১৩ কোটি টাকা। শনিবার কল্যাণীতে বাঁধ নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। যদিও কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজে উদ্যোগ নিয়ে রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছে রাজ্যের শাসক দল।

Advertisement

কল্যাণী ব্লকের তারিনিপুর, কালীপুর, গঙ্গা মনোহরপুর, চর যাত্রাসিদ্ধি, সরাটি ও রায়ডাঙা এলাকার ৩৪৩৭ মিটার ভাঙন এলাকার জন্য নদীপারে বাঁধ দেওয়ার কাজ অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় সরকার। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর কলকাতার অধীনে এই কাজ অনুমোদন হয়। দীর্ঘদিন ধরে কল্যাণী ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা ভাঙন কবলিত। ভাঙনের ফলে মানুষের জীবন-জীবিকা-সহ সম্পত্তির ক্ষতি হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। ভাঙন প্রতিরোধের কাজের খবরে খুশি এলাকার মানুষ। মোহনপুরের বাসিন্দা আশিস রায় বলেন, ‘‘প্রয়োজন তো অনেক। তবে যেটুকু হচ্ছে, তাতেই আমরা খুশি। এই কাজটুকু যেন ভাল ভাবে হয়।’’

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ও পরবর্তী ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নদিয়া দক্ষিণাংশ অর্থাৎ রানাঘাট লোকসভার অন্তর্গত ভাগীরথীর পার এলাকায় একাধিপত্য দেখা গেছে বিজেপির। পঞ্চায়েত ভোটে চিত্রটা ঠিক উল্টো। বিজেপির গড়ে তুলনামূলক অনেক ভাল ফল করে তৃণমূল। আগামী বছরের প্রথম দিকেই লোকসভা ভোট হওয়ার সম্ভাবনা। অনেকের মত, সে কথা মাথায় রেখেই স্থানীয় মানুষদের ক্ষোভ সামাল দিতে তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। ভাঙ্গন কবলিত মানুষের ভোট যাতে কোনোভাবেই বিরোধীপক্ষে না যেতে পারে, সেই নিয়ে জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে ২ শিবিরে। কেন্দ্রীয় জল সম্পদ রাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর জানান " মন্ত্রকের অধীন স্বশাসিত কমিটির পক্ষ থেকে এই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিন কিলোমিটার এর কাজ শুরু হলেও পরবর্তীতে একটি বৃহত্তর প্রকল্পে গঙ্গা পার বাধা এর কাজ করবে কেন্দ্রীয় সরকার"। যদিও মন্ত্রীর দাবিকে উড়িয়ে দিয়ে রানাঘাট তৃণমূল সংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবাশীষ গঙ্গোপাধ্যায় জানান " ভোটের আগে ভাঁওতা দিতে নামে মাত্র প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। দাবানলের মধ্যে এক বালতি জল ফেলে কোন সমস্যা সমাধান হয় না। উত্তরপ্রদেশ সহ অন্যান্য রাজ্যের মত বাংলা কেন নদীপাড় ভাঙ্গনের ক্ষেত্রে বৃহত্তর প্রকল্প পাবে না , সেই প্রশ্নের উত্তর আগে মন্ত্রী দিক"। প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়াতেই খানিকটা স্বস্তিতে ভাঙ্গন কবলিত স্থানীয় মানুষ।

Advertisement

উল্লেখ্য , গঙ্গাভাবন প্রতিরোধে শান্তিপুর গভারচর এলাকায় রাজ্য শেষ দপ্তরের অধীন অস্থায়ী বালির বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল আগেই। এছাড়াও মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জে স্থায়ী ভাঙ্গন প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সেই প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এরমধ্যেই শান্তিপুর এলাকার তিন কিলোমিটার গঙ্গা পার বাঁধনে কেন্দ্রীয় সরকারের ১৩ কোটি টাকা বাড়তি বরাদ্দে ভাঙ্গন প্রতিরোধের কাজ ত্বরান্বিত হবে বলেই আশা সংশ্লিষ্ট মহলের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement