রানাঘাট স্টেশন। নিজস্ব চিত্র।
'অমৃত ভারত রেল স্টেশন' প্রকল্পে রানাঘাটের নাম না থাকা নিয়ে আগেই প্রশ্ন উঠেছিল। বিভিন্ন সংগঠনের তরফে পূর্ব রেলের কাছে এ জন্য স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। সেই সময় অবশ্য রেলের তরফে ইঙ্গিত মিলেছিল, আগামী দিনে খোলনলচে বদলে ফেলা হবে পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের দ্বিতীয় বৃহত্তম রেল স্টেশন রানাঘাটকে। সেই কাজ আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে। অন্তত নথিপত্রে তেমনই প্রমাণ মিলল
এই কাজের জন্য রবিবার রেলের তরফে প্রায় ৩০ কোটি টাকার দরপত্র ডাকা হয়েছে। পূর্ব রেল সূত্রে খবর, রানাঘাট রেল স্টেশনকে আধুনিক মানের মডেল স্টেশনে রূপ দিতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তার জন্য প্রথম পর্বে বরাদ্দ হয়েছে ৩০ কোটি টাকার।
দেশের মোট ৫৩৮ টি স্টেশনকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে 'অমৃত ভারত স্টেশন' প্রকল্প নিয়েছে কেন্দ্র। নদিয়ার শান্তিপুর, কৃষ্ণনগর, গেদে, কল্যাণী স্টেশনের নাম সেই তালিকায় থাকলেও রানাঘাটের নাম না থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন রেলত্রীদের একাংশ। নতুন করে রানাঘাট স্টেশনের আধুনিকীকরণে রেল অর্থ বরাদ্দ করায় খুশি তাঁরা।
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিয়ালদহ ডিভিশনে শিয়ালদহের পর অন্যতম বড় ও গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন রানাঘাট। অথচ এই স্টেশনে নেই আধুনিক মানের যাত্রী প্রতীক্ষালয়। অনুসন্ধান কেন্দ্রের মতো ন্যূনতম পরিষেবা। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন। আবার রানাঘাট রেলস্টেশন থেকেই বছরে ১৪ কোটি টাকারও বেশি আয় হয় রেলের। এই স্টেশনের সঙ্গে বনগাঁ ও গেদে দুই সীমান্তবর্তী রেল স্টেশনের যোগাযোগও রয়েছে। মাস কয়েক আগে শিয়ালদহ থেকে নৈহাটি পর্যন্ত তৃতীয় লাইন চালু হয়েছিল। এবার রানাঘাট থেকে নৈহাটি পর্যন্ত ওই তৃতীয় লাইনকে যুক্ত করা হবে। এতে লোকাল ট্রেনের কারণে এক্সপ্রেস ট্রেনের গতি শ্লথ হওয়ার বিষয়টি এড়ানো সম্ভব হবে।
এছাড়া রেলের তরফে প্রকাশিত দরপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, রানাঘাট রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্মগুলির সম্প্রসারণ করা হবে। স্থানান্তর করে নতুনরূপে নির্মাণ করা হবে জিআরপি অফিস, নতুন ফুট ওভার ব্রিজ। তৈরি হবে প্ল্যাটফর্ম শেড ইত্যাদি। অর্থাৎ আগামী দিনে রানাঘাট স্টেশনকে সম্পূর্ণ বদলে ফেলা হবে। শুধু তাই নয়, রেল স্টেশনকে কেন্দ্র করে (G+3) ভবনও নির্মাণ করা হবে। সেখানে থাকবে আধুনিকমানের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত যাত্রী প্রতীক্ষালয়। এছাড়া ইমিগ্রেশন ও শুল্ক দফতরের অফিসও হতে চলেছে রানাঘাট স্টেশনে। রেলের কর্তাদরা জানান, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী দু’বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। রানাঘাট প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে বোধিসত্ত্ব চক্রবর্তী বলেন, "দীর্ঘদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ এই রেলস্টেশনের আধুনিকীকরণের দাবি জানিয়ে আসছিলাম। শেষ পর্যন্ত রেল সেই উদ্যোগ নেওয়ায় আমরা খুশি।’’ দাবি পূরণে খুশি রানাঘাট নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতিও। বিষয়টি নিয়ে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, "যাত্রী পরিষেবা উন্নতির লক্ষ্যেই এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি ধাপে শেষ হবে প্রকল্পের কাজ।"