ঝঞ্ঝাট থেকে বাঁচতে গাড়ির কাচেও ‘প্রতিবাদ’

গত বৃহস্পতিবার থেকে মুর্শিদাবাদ জুড়ে  নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শুক্রবার থেকে বিক্ষোভকারীরা রেলের সম্পত্তি ভাঙচুর পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বহু গাড়ি, বাস পুড়িয়ে দিয়েছে।

Advertisement

সুজাউদ্দিন বিশ্বাস

ডোমকল শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫১
Share:

গাড়িতেও প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র

বিক্ষোভের জেরে রাস্তায় গাড়ি নামানো দুষ্কর হয়ে পড়েছে। কিন্তু কতদিন আর এভাবে কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে থাকা যায়। রাস্তায় বেরিয়ে বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে যাতে পড়তে না হয়, সেই জন্য জেলার অধিকাংশ গাড়ি চালকই এখন এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী। গাড়িরে উইন্ডস্ক্রিনে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে পোস্টারও সাঁটিয়ে রাখছেন তাঁরা।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার থেকে মুর্শিদাবাদ জুড়ে নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। শুক্রবার থেকে বিক্ষোভকারীরা রেলের সম্পত্তি ভাঙচুর পুড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বহু গাড়ি, বাস পুড়িয়ে দিয়েছে। গত তিনদিন ধরে রাস্তায় গাড়ি নামাতেই সাহস পাচ্ছেন না চালকরা। কিন্তু কাঁহাতক এভাবে কাজ না করে বসে থাকবেন তাঁরা। ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চালকদের একাংশ তাই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের রোষে যাতে পড়তে না হয়, সেই জন্য তাঁরা গাড়িতে এনআরসি বিরোধী পোস্টার সাঁটিয়ে রাখছেন। সোমবার ট্রাকে বাঁশ নিয়ে কলকাতার যাচ্ছিলেন ট্রাক চালক সঞ্জয় মণ্ডল। তাঁর কথায়, "ট্রাক চালালে দু’পয়সা রোজগার হয়। বাড়ির এতগুলো লোক আমার রোজগারের দিকে তাকিয়ে, তাই কাজে না বেরিয়ে উপায়ও নেই। মালিক ফোন করে বললেন, পোস্টার সাঁটিয়ে ট্রাকের সামনের কাচে সেঁটে দেওয়ার জন্য। বাধ্য হয়ে তাই করেছি। অস্বীকার করে লাভ নেই। এতটা রাস্তা এলাম। কোনওরকম ঝামেলার সামনে পড়তে হয়নি।’’

একটি ছোট যাত্রিবাহী গাড়ির চালক যুবক বললেন, ‘‘দু’দিন বাড়িতে বসে ছিলাম। কিন্তু এভাবে কাজ না করে বসে থাকলে চলবে। এক পরিচিতের কম্পিউটার, ডিটিপি সেন্টার আছে। তাকে বলে কালো কালিতে লেখা এনআরসি বিরোধী পোস্টার জোগাড় করেছি।। গাড়ির সামনের কাচে সেই পোস্টার আটকে দিয়েছি। আজ সারা দিন এভাবেই যাতায়াত করেছি। কোনও ঝামেলায় পড়তে হয়নি।’’

Advertisement

সাইফুল ইসলাম নামে এক ট্রেকার চালকের কথায়, ‘‘তিনদিন আগে দেখছিলাম, দূর-দূরান্ত থেকে বিক্ষোভকারীরা গাড়িতে করে শহরে আসছে। তাদের গাড়িগুলিতে নাগরিক বিলের বিরুদ্ধে লেখা পোস্টার। তা দেখেই একই পোস্টার সাঁটার কথা মাথায় আসে। বিক্ষোভকারীদের হামলা থেকে বাঁচতে এটা খুবই কাজে দিয়েছে। তবে অধিকাংশ গাড়ি চালকই বলছেন, ভাঙচুর, গাড়ি পোড়ানো তাঁরা সমর্থন করেন না। নতুন আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হোক শান্তিপূর্ণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement