যাত্রী নিয়ে নদিয়ার করিমপুর থেকে দিঘা যাওয়ার পথে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যাওয়ায় মৃত্যু হল কন্ডাক্টরের। আহত হন ৩০ জন যাত্রী।
বৃহস্পতিবার ভোরে দুর্ঘটনাটি ঘটে উলুবেড়িয়ার বীরশিবপুরে মুম্বই রোডে। আহতদের উলুবেড়িয়া ইএসআই এবং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মৃতের নাম কালু খান (৪১)। বাড়ি করিমপুরের কুচাইডাঙার বক্সপাড়ায়। ঘটনার পরই বাসের চালক পালান বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাসটি ছিল ডোমকল-দিঘা ভায়া করিমপুর রুটের। তবে, বুধবার সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ বাসটি ডোমকলের পরিবর্তে নদিয়ার করিমপুর থেকে ছাড়ে। সেখান থেকেই যাত্রী তুলে বাসটি দিঘা যাচ্ছিল। যাত্রীদের অধিকাংশ করিমপুরের বাসিন্দা। কয়েকজন ছিলেন চাকদহেরও। দ্রুতগতিতে বাসটি মুম্বই রোড ধরে আসার পথে চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে সেটি উল্টে যায়। কন্ডাক্টর বাসের নীচে চাপা পড়েন। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। বাসে জনাপঞ্চাশ যাত্রী ছিলেন। তাঁদের চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাস্থলে চলে আসেন। আসে পুলিশও। সকলকেই উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩০ জনকে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চাকদহের বাসিন্দা কৌশিক হাজরা এবং তাঁর স্ত্রী পূর্বা বলেন, ‘‘ঘুমিয়ে ছিলাম। প্রচণ্ড শব্দে জেগে উঠি। তারপরে ফের জ্ঞান হারাই। পরে দেখি হাসপাতালে ভর্তি আছি।’’
এ দিন খুব সকালেই দুর্ঘটনার খবর পৌঁছে যায় বক্সপাড়ায়। ইদের মুখে এই দুঃসংবাদে নিমেষেই হারিয়ে যায় সমস্ত গ্রামের মানুষের আনন্দ। ছয় ভাইয়ের মধ্যে পঞ্চম কালু খান। বাড়িতে রয়েছেন তার স্ত্রী আলিয়া বিবি এবং ছেলেমেয়ে। কালুর বাবা আকবর খান বলেন, ‘‘বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে যাওয়ার আগে করিমপুর বাজার থেকে পরিবারের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনেছিল ও। বলে গিয়েছিল, শুক্রবার দিঘা থেকে ফিরে দু’দিন ছুটি নিয়ে ইদে বাড়িতেই থাকবে। কিন্তু তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।’’ কুচাইডাঙা তকিপুর ঈদগাহ কমিটির সম্পাদক সাজাহান খান জানান, “এই মৃত্যুতে এলাকার সকলেই মর্মাহত। অন্য বছর যে ভাবে এই পরব উদ্যাপন করা হয়ে থাকে, সে ভাবে কিছুই হবে না। আলোকসজ্জা, ঈদগাহ সাজানো কিংবা বাজি পোড়ানোর মতো সব কিছুই বন্ধ রাখা হবে।”