কাটমানির কথা কবুল স্ত্রীর, শুনে নেতা বললেন ‘বোকা’

এলাকার মহিলাদের দাবি, লোকসভা ভোটের ফল বার হওয়ার পর থেকেই দীপঙ্কর পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মাঝে মাঝে অনেক রাতে বাড়ি ফেরেন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কল্যাণী শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৯ ০০:৫০
Share:

প্রতীকী ছবি।

বছর খানেক আগে তিনি পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। গত পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য টিকিট পাননি। এলাকার মানুষের অভিযোগ, উত্তর চাঁদামারির বাসিন্দা দীপঙ্কর বিশ্বাস কাঁচরাপাড়া পঞ্চায়েতের সদস্য থাকাকালীন শৌচাগার ও ঘর দেওয়ার নাম করে বহু লোকের কাছ থেকে টাকা তুলেছিলেন। কিন্তু টাকা দেওয়ার পরেও অধিকাংশ লোক সেই শৌচাগার ও ঘর পাননি। একশো দিনের কাজ করেও অনেকে টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। অভিযোগ, অন্যায় ভাবে সেই টাকা তুলে নিয়েছে দীপঙ্কর। সেই সব টাকা ফেরত চেয়ে রবিবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ এলাকার শতাধিক মহিলা তাঁর বাড়ি বিক্ষোভ দেখান। তবে সেই সময় দীপঙ্কর বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী মল্লিকা বিশ্বাসকে ঘিরেই বিক্ষোভ চলে।

Advertisement

এলাকার মহিলাদের দাবি, লোকসভা ভোটের ফল বার হওয়ার পর থেকেই দীপঙ্কর পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মাঝে মাঝে অনেক রাতে বাড়ি ফেরেন। রবিবার মাঝরাত পর্যন্ত তাঁর জন্য বিক্ষোভকারীরা অপেক্ষা করেন। কিন্তু তিনি না-আসায় তাঁরা দীপঙ্করের বাড়ি চলে যান। তাঁদের দেখে দীপঙ্করের স্ত্রী বাড়ির প্রধান ফটক ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন। ওই রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, দীপঙ্করের স্ত্রী মল্লিকা গ্রিলের ও পার থেকে স্বামীর অপরাধ মেনে নিয়ে বলতে থাকেন, ‘‘আমার স্বামী টাকা নিয়েছে। তা ধীরে সুস্থে ফেরতও দেবে।’’ তবে মল্লিকার দাবি, ‘‘যাঁরা টাকা দিয়েছিলেন তাঁদেরও দোষ রয়েছে। ঘুষ দেওয়া ও নেওয়া দুই-ই সমান অপরাধের।’’

এ কথা শুনে বিক্ষোভকারী মহিলারা আরও খেপে যান। তাঁরা জানান, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে সরল বিশ্বাসে তাঁরা টাকা দিয়েছিলেন। এখন জানতে পেরেছেন, ওই প্রকল্পের সুবিধা পেতে টাকা দিতে হয় না। তার উপর একশো দিনের কাজ করেও মজুরি মেলেনি। এলাকার বাসিন্দা কাজল মণ্ডল, পরান মণ্ডল, শাকিলা বিবি, বিলু মোল্লা, মেহেরুন মণ্ডল, পুটু মোল্লা, নুরজাহান মণ্ডল, আব্দুর রশিদ মোল্লা, ভোলা মণ্ডলেরা জানাচ্ছেন, সব টাকা আত্মসাৎ করেছে দীপঙ্কর। অভিযোগকারীদের আরও দাবি, পঞ্চায়েত থেকে শৌচাগার তৈরি করে দেবে বলে ৯০০ টাকা করে তুলেছিলেন দীপঙ্কর। কিন্তু অনেকেই শৌচাগার পাননি। এই ব্যাপারে দীপঙ্করের বক্তব্য, ‘‘শৌচাগারের টাকা পঞ্চায়েতে জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু আগের সচিব এখন নেই। ফলে টাকার হিসেব মিলছে না। আর বাকি সব অভিযোগ মিথ্যা।’’ তাঁকে তখন জিজ্ঞাসা করা হয়, আপনার স্ত্রী যে স্বীকার করলেন আপনি টাকা নিয়েছেন! এ প্রশ্নের উত্তরে দীপঙ্কর বলেন, ‘‘আসলে আমার স্ত্রীর বেশি বুদ্ধি নেই। ফলে সে ভুল করে ও সব বলেছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement