মনোনয়নের পঞ্চম দিন

এসডিও-র কাছে জমা শেষ দু’দিন

পুলিশকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে রেখে তাণ্ডবের অভিযোগ প্রথম দিন থেকেই উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ব্লক অফিস থেকে বিরোধীদের মেরে-ধরে ভাগিয়ে দেওয়া বা কাছেই ঘেঁষতে না দেওয়ার অভিযোগ ভূরি-ভূরি। তার ব্যতিক্রম শুক্রবারও হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৩৯
Share:

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পথে। শুক্রবার কৃষ্ণনগরে। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য ও অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

পুলিশকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানিয়ে রেখে তাণ্ডবের অভিযোগ প্রথম দিন থেকেই উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ব্লক অফিস থেকে বিরোধীদের মেরে-ধরে ভাগিয়ে দেওয়া বা কাছেই ঘেঁষতে না দেওয়ার অভিযোগ ভূরি-ভূরি। তার ব্যতিক্রম শুক্রবারও হয়নি।

Advertisement

আজ, শনিবার থেকে ব্লকের সঙ্গে মহকুমাশাসকের (এসডিও) অফিসে মনোনয়ন জমা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। জেলা পরিষদের মনোনয়ন সেখানে আগেই নেওয়া হত। এ বার পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের মনোনয়নও জমা দেওয়া যাবে। কিন্তু তাতেও অবস্থা আদৌ পাল্টাবে কি না, সে সম্পর্কে বিরোধীরা সন্দিহান।

তার কারণও আছে। রঘুনাথগঞ্জে মহকুমাশাসকের অফিস চত্বরে এ দিন বোমাবাজি হয়। অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বড়ঞার সাহোড়া পঞ্চায়েত এলাকায় বিজেপি কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বড়ঞা ব্লক কমিটির সভাপতি আনন্দ ঘোষ তাতে জখম হন। প্রতিবাদে কান্দি মহকুমাশাসকের অফিস ঘেরাও করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তার আগেই তৃণমূলের লোকজন সেখানে জড়ো হয়ে যায়। মারপিটও হয় ফের। ভরতপুর ২ ব্লকে কংগ্রেস অফিস ভাঙচুরের অভিযোগও আছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস অবশ্য দাবি করেন, “হামলার ঘটনা ঘটেনি। ওদের নিজেদের অস্তিত্ব নেই। তাই মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।”

Advertisement

সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যের অভিযোগ করেছেন, “মহকুমাশাসকের অফিস চত্বরে আমাদের উপরে হামলা হয়। আমাদের পার্টি অফিসেও আক্রমণ হয়েছে। পুলিশের সহযোগিতাতেই এ সব হচ্ছে।” কতটা নিরাপত্তা মিলবে তা নিয়ে সন্দিহান বিজেপি-ও। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস অবশ্য বলেন, “এ দিন নবগ্রাম, জঙ্গিপুর, ডোমকল-সহ নানা এলাকায় তৃণমূল সন্ত্রাস চালিয়েছে। মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমার নির্দেশকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”

নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শনি ও সোমবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। সিপিএমের নদিয়া জেলা সম্পাদক সুমিত দে বলেন, “ব্লক অফিসে তো আমাদের ঢুকতেই দিচ্ছে না। মেরে বের করে দিচ্ছে। মহকুমাশাসকের দফতরে গিয়ে একই অভিজ্ঞতা হবে না, আশা করি। বাস্তবে কী দাঁড়ায়, তা শনিবারই বোঝা যাবে।”

বেশির ভাগ জায়গায় এই অবস্থা চললেও তেহট্ট মহকুমার ছবি তুলনায় শান্তিপূর্ণ। করিমপুরের তৃণমূল বিধায়ক মহুয়া মৈত্র বলেন, “বাইরে কোনও লড়াই-মারামারি নয়, লড়াই হবে ব্যালটে। গত দু’বছরে যে উন্নয়ন হয়েছে, সেটাই আমাদের হাতিয়ার।” সিপিএমের তেহট্ট এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাস অবশ্য অনুযোগ করেন, কিছু এলাকায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তবে কোথা মনোনয়ন জমায় বাধা দেওয়ার অভিযোগ নেই।

বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুভাষ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘বেশির ভাগ জায়গায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ব্লক দফতর আগলে রেখেছে। পুলিশ দাঁড়িয়ে তাদের পাহারা দিয়েছে। ফলে কেউ সাহস করে মনোনয়ন জমা দিতে পারছে না।’’ নদিয়ার পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে বলেন, ‘‘এ সব ভিত্তিহীন কথা। আমাদের কাছে কোনও নির্দিষ্ট অভিযোগ আসেনি। এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement