শেষ লগ্নেও মার-হুমকি

প্রথম দিন থেকে যা চলছিল, সোমবারেও তার ব্যতিক্রম হল না। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা রুখতে মারধর, কাগজ ছিঁড়ে দেওয়া, রাস্তা আটকানোর পুনরাবৃত্তি ঘটল। মনোনয়ন জমা এ দিনই শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে, রাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।  

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৮
Share:

মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারার ক্ষোভে তা রাস্তায় ফেলে পুড়িয়ে দিলেন এসইউসি-র লোকজন। রঘুনাথগঞ্জে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়

প্রথম দিন থেকে যা চলছিল, সোমবারেও তার ব্যতিক্রম হল না। পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা রুখতে মারধর, কাগজ ছিঁড়ে দেওয়া, রাস্তা আটকানোর পুনরাবৃত্তি ঘটল। মনোনয়ন জমা এ দিনই শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে, রাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

Advertisement

এ দিন দুপুরে বেলডাঙা ১ ব্লক অফিসে ঢুকতে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের হামলার মুখে পড়েন কংগ্রেস বিধায়ক সফিউজ্জামান। ধাক্কাধাক্কি হয়, নেতাকে বাঁচাতে গিয়ে চড়থাপ্পড় খান কর্মীরা, এক জনের মাথা ফাটে। পরে পাল্টা দিতে থানার মোড়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কংগ্রেস। একটি বাসে তৃণমূলের কর্মী ও প্রার্থীরা কালীতলা এলাকা থেকে ব্লক অফিসে আসছিলেন। সেটি ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ ও তৃণমূলের বাহিনী গিয়ে অবরোধ তুলে দেয়।

রঘুনাথগঞ্জে ১ ব্লক ও জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসকের অফিস ঘিরে লাঠি-রড-উইকেট নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে তৃণমূল। রেজিস্ট্রি অফিসের মোড়, আদালত মোড়, জেলখানা মোড় ও পুরোনো পোস্ট অফিসের সামনে কয়েকশো তৃণমূল সমর্থক রাস্তা আটকে রাখে। ফলে, কংগ্রেস ও সিপিএমের কয়েকশো প্রার্থী ধারে-কাছেই যেতে পারেননি বলে অভিযোগ। যাওয়ার চেষ্টা করলেই জুটেছে কিল-চড়। মার খেয়েছেন সংবাদ-কর্মীরাও। আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মুখ-ঢাকা দুষ্কৃতীদেরও সচ্ছন্দে ঘুরতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ যথারীতি দর্শকের ভূমিকায়। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন জঙ্গিপুরের মহকুমাশাসকের কৃতিকা শর্মার ভূমিকা নিয়েও।

Advertisement

কৃষ্ণনগরে এ দিন বিশেষ কোনও ঝামেলা হয়নি। কিন্তু করিমপুর ২ ব্লকে অফিসে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়ে পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী চঞ্চলা সরকারের কাগজ কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। পরে তেহট্ট মহকুমাশাসকের অফিসে তিনি মনোনয়ন জমা দেন। গত শনিবার সাতসকালে মনোনয়ন জমা দিয়ে তৃণমূলকে চনকে দিয়েছিল বিজেপি। শেষ দিনে যাতে তার পুনরাবৃত্তি না হয়, তার জন্য রবিবার মাঝরাত থেকেই মোহনপুরের কাছে লোকজন জড়ো করেছিল তৃণমূল। যদিও নেতারা তা মানতে নারাজ।

সকাল ৯টা নাগাদ সুতি ২ ব্লকের জনা পঁচিশ কংগ্রেস প্রার্থীকে নিয়ে জঙ্গিপুর মহকুমাশাসকের অফিসে বসিয়ে দিয়ে কান্দি রওনা দিয়েছিলেন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বেরিয়ে যেতেই এক দল যুবক এসে কাগজপত্র কেড়ে চড়থাপ্পড় মেরে তাঁদের বের করে দেয়। পুলিশ ছিল কার্যত নির্বিকার।

মনোনয়ন জমার প্রথম দিনেই রক্ত ঝরেছিল ডোমকলে। এক বিজেপি নেতার মাথা ফাটে। দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে মারধর করা হয় কংগ্রেস নেতাদের। শেষ দিনেও পুলিশের সামনেই লাঠিসোটা নিয়ে দাপিয়ে বেরিয়েছে ভৈরব-বাহিনী। পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে গেলে উল্টে ধমক খেতে হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা।

বহরমপুরে লাঠি হাতে হামলা চালায় তৃণমূলের লোকজন। বিরোধী কয়েক জন আহত হন। এসপি অফিস ঢিল ছোড়া দূরত্বে এই তাণ্ডব চলে। পুলিশ গিয়ে সামলায়। তার পরেও জেলাশাসকের দফতরের গেট ঘিরে দাঁড়িয়ে ছিল বাহিনী। বিরোধীরা ঢুকতে গেলে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আগে থেকে পুলিশের গড়া সর্বদল ‘সমন্বয় কমিটি’ সক্রিয় থাকায় লালবাগ, সুতি ১ ও ফরাক্কা ব্লকে শান্তিতেই মনোনয়ন পর্ব মিটেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement