প্রশ্নের মুখে সিভিক কর্মীরা

শাসকদলের হয়ে হুমকির অভিযোগ

কিছু সিভিক ভল্যান্টিয়ার আবার এক কাঠি এগিয়ে বিরোধী প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছেন বা তাঁদের গতিবিধির খবর জোগাচ্ছেন তৃণমূলকে, এমন অভিযোগও নানা এলাকা থেকে উঠছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৫৪
Share:

ফাইল চিত্র।

পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তো ছিলই। কিছু সিভিক ভল্যান্টিয়ার আবার এক কাঠি এগিয়ে বিরোধী প্রার্থীদের হুমকি দিচ্ছেন বা তাঁদের গতিবিধির খবর জোগাচ্ছেন তৃণমূলকে, এমন অভিযোগও নানা এলাকা থেকে উঠছে। আজ, সোমবার মনোনয়নের বাড়তি দিনে সেই সব সিভিক কর্মীদের ভূমিকা কী হবে, আশঙ্কায় বিরোধী প্রার্থীরা।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, শনিবার সাগরদিঘিতে এক বিজেপি প্রার্থীর বাড়ি গিয়ে তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়ার অভিযোগ ওঠে জালু শেখ নামে এক সিভিক কর্মীর বিরুদ্ধে। গাঁয়ের লোকজনের কাছে মারধর খাওয়ার পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। যদিও জালুর দাবি, তিনি চাপ দিতে যাননি, একটা ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হয়েছে। ‘কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি’ বলে দায় ঝেড়েছে পুলিশও।

কিন্তু শুধু সাগরদিঘি তো নয়, বেশ কিছু জায়গাতেই সিভিক কর্মীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। ‘উন্নয়ন’ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকায় ব্লক অফিসে যেতে না পেরে কৃষ্ণনগরে মহকুমাশাসকের দফতরে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়েছিলেন চাপড়ার সুঁটিয়া গ্রামের কাকলি ঘোষ। পরের রাতেই কয়েক জন তাঁর বাড়ি গিয়ে মনোনয়ন তুলে নিতে চাপ দেয়। অভিযোগ, এদের মধ্যে এক সিভিক ভল্যান্টিয়ার ছিলেন। কাকলি বলেন, ‘‘জানতাম, তৃণমূলের লোকজন চাপ দেবে। কিন্তু সিভিক ভল্যান্টিয়ারও যে আসবে, জানতাম না।”

Advertisement

সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্যও অভিযোগ করেন, “সুতি, সাগরদিঘি, ভরতপুর, লালগোলা, ভগবানগোলা— সর্বত্রই সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা আমাদের কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। শাসক দলের হয়ে কাজ করছে ওরা।” প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাসও কার্যত একই অভিযোগ এনেছেন। বিজেপির জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষের মতে, “পুলিশ থেকে সিভিক ভল্যান্টিয়ার, সকলেই তৃণমূল ক্যাডার হিসেবে কাজ করছে।”

সিপিএমের চাপড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক জাহাঙ্গীর বিশ্বাস আবার বলেন, “আমাদের প্রার্থীদের এখনও সরাসরি হুমকি দেননি কোনও সিভিক কর্মী। কিন্তু থানায় ঢোকা যাচ্ছে না ওঁদের জন্য। সঙ্গে-সঙ্গে ওঁরা তৃণমূলকে খবর দিয়ে দিচ্ছেন।” তাঁর আক্ষেপ, কেউ অভিযোগ জানাতে গেলেই ওই সিভিক কর্মীদের মারফত তৃণমূল নেতারা জেনে যাচ্ছেন। তার পরেই আসছে হুমকি ফোন।

থানারপাড়ার ধোড়াদহের বিজেপি প্রার্থী লতিফ মণ্ডল অভিযোগ করেন, তাঁকে রাস্তায়, চায়ের দোকানে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এবং সেই দলে সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরাও আছেন। বিজেপির নদিয়া (উত্তর) সাংগঠনিক জেলার সভাপতি মহাদেব সরকারের বক্তব্য, “লতিফ যাতে মনোনয়নপত্র তুলে নেন, সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা ওঁকে ধর্মের সুড়সুড়ি দিচ্ছেন।”

ফুলিয়ায় কিছু সিভিক কর্মীই শান্তিপুর ব্লক অফিসের ভিতরে বিরোধী প্রার্থীদের চিনিয়ে দেন বলে অভিযোগ। সিপিএমের ফুলিয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক অনুপ ঘোষ বলেন, “তৃণমূলের যে গুন্ডারা ব্লক অফিস ঘিরে রেখেছিল, তারা বেশির ভাগই বহিরাগত। কে কোন দলের, তারা চেনে না। চিনিয়ে দেওয়ার কাজ করেছেন সিভিক ভল্যান্টিয়ারেরা।” যদিও নদিয়ার পুলিশ সুপার সন্তোষ পান্ডে বলেন, “এমন অভিযোগ আমি পাইনি। এমনটা হওয়ার কথাও নয়।” মুর্শিদাবাদ পুলিশের কোনও কর্তাও এমন কোনও অভিযোগ পেয়েছেন বলে জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement