—ফাইল চিত্র।
জল্পনাটা চলছিল বেশ কিছু দিন ধরেই। শেষ পর্যন্ত সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন জেলা সভাপতি অসীম সাহা।
মঙ্গলবার কলকাতায় বিজেপির জেলা কার্যালয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতে অসীমবাবু বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর সঙ্গেই এ দিন বিজেপিতে যোগ দিলেন লোকসঙ্গীত শিল্পী দম্পতি গঙ্গাধর মণ্ডল ও তুলিকা মণ্ডল। তাঁদের তিন জনকেই সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মহাদেব সরকার।
কলেজে ছাত্র পরিষদ করা দিয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন অসীমবাবু। এক সময় সুব্রত, প্রিয়, সৌমেন-ঘনিষ্ঠ ছাত্র নেতা হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্র থেকে দু’ বার কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন। অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি হওয়ার পরে ২০১৪ সালে শঙ্কর সিংহকে সরিয়ে তাঁকে জেলা সভাপতি করেছিলেন। বিধানসভা ভোটে নদিয়া জেলা থেকে তিনটি আসনে কংগ্রেস জয়ী হলেও পরে কংগ্রেস প্রার্থীরা সকলেই তৃণমূলে যোগ দেন। তার পর থেকে কার্যত অসীমবাবু একাই কংগ্রেস করে গিয়েছেন। কঠিন সময়ে দলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একটি অংশের নেতা-কর্মীদের আস্থা অর্জন করে নিয়েছিলেন তিনি। শেষের দিকে অধীর চৌধুরী- ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত হন। অনেকেই মনে করেন এই অধীর ঘনিষ্টতাই তাঁর কাল হয়েছিল। অধীরকে সরিয়ে সোমেন মিত্রকে প্রদেশ সভাপতি করা হয়। তখন অসীম সাহাকে সরিয়ে সোমেন-ঘনিষ্ঠ জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্য জেলা সভাপতি হয়ে যান। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, যে ভাবে রাতারাতি তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল তা মানতে পারেননি অসীমবাবু। মাস কয়েক আগেও তিনি বিজেপিতে যোগ দেবেন বলে মনস্থির করে শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে এসেছিলেন। অবশেষে ফের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। এ দিন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুর্দিনে বুক দিয়ে কংগ্রেসকে আগলে রেখেছিলাম। তার কোনও দাম দল দেয়নি। এ বার তাই নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গী হয়ে দেশ গঠনে নাম লেখালাম।” যা শুনে জেলা কংগ্রেসের সভাপতি জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্যের উক্তি, “উনি তো আগেই যেতে চেয়েছিলেন। কেন এত দেরি করলেন বুঝতে পারছি না। এই ধরনের মানুষরা চলে গেলে দলের মঙ্গলই হবে।”