তাস খেলায় মশগুল। নাজিরপুরে। ছবি: সাগর হালদার।
মানসিক অবসাদ কাটাতে পাশাপাশি শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে দিতে বৃদ্ধদের জন্য অভিনব উদ্যোগ নিল নাজিরপুরের একদল যুবক।
রবিবার তেহট্ট থানার নাজিরপুরে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সী বৃদ্ধদের নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিল হারিয়ে যাওয়া শৈশবের বিভিন্ন খেলাধূলার। প্রতি খেলা ছিল প্রতিযোগিতামূলক। সেই সঙ্গে ছিল খাওয়া দাওয়া। এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে খুশি প্রবীণেরাও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাজিরপুর এলাকার বেশ কয়েক জন যুবক এই প্রথম এই ধরনের উদ্যোগ নিলেন। তাঁরা এর নাম দেন ‘হারিয়ে যাওয়া ৬০’। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল, গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলাধূলাকে বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। পাশাপাশি বহু মানুষ আছেন যাঁরা বয়সের কারণে বাড়িতেই থাকেন। এমনকি পুরনো দিনের কথা ভেবে অনেকে অবসাদগ্রস্তও হয়ে পড়েন। তাঁদের কথা ভেবে পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে দিতে এবং মনোরঞ্জনের জন্য ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য এমন ব্যবস্থা করেছিলেন তাঁরা।
রবিবার সকাল থেকেই নাজিরপুরের বাগাডোবায় ছিল উন্মাদনা। সাজিয়ে তোলা হয়েছিল একটি জায়গা। সেখানেই মূলত জড়ে হয়েছিলেন বৃদ্ধরা। প্রথমেই নানা ধরনের হারিয়ে যাওয়া খেলায় অংশ নেন তাঁরা। যার মধ্যে ছিল এক সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ডাঙগুলি, পিট্টু, টায়ার চালানো, রিং চালানো, দাগল খেলা, লুকোচুরি, কিতকিত, বুড়ি ছোঁয়া, কানামাছি-সহ একাধিক প্রতিযোগিতা। অনুষ্ঠানে আসেন বেতাই বি আর অম্বেডকর কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মঙ্গলচন্দ্র মৌলিক। তিনি বলেন, “আমরা এই বয়সে এসে একদিনের জন্য হলেও যেন ছেলেবেলায় ফিরে গিয়েছিলাম। ফিরে পেলাম হারিয়ে যাওয়া খেলা। উদ্যোক্তাদের এই উদ্যোগ আমাদের মতো বৃদ্ধ- বৃদ্ধাদের অবসর জীবনে আনন্দ নিয়ে এল। তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছোট করব না।” ছিলেন নাজিরপুর বিদ্যাপীঠের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সন্তোষ বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘এক ভীষণ ভাল মুহূর্ত কাটালাম। পুরনো স্মৃতি চোখের সামনে এ ভাবে আসবে, ভাবিনি।”