AIIMS

‘রেফার’ নিয়ে বিতর্কে এমস

হৃদরোগের চিকিৎসায় আধুনিক পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে মাসে প্রায় ছয়শো রোগীকে এমস থেকে স্থানান্তর করা হচ্ছে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের গান্ধী মেমোরিয়ালে।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩০
Share:
কল্যাণী এমস হাসপাতাল।

কল্যাণী এমস হাসপাতাল। —নিজস্ব চিত্র।

গত বছর অক্টোবর মাসের শেষে কল্যাণী এমসে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হয় হৃদরোগ বিভাগ। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি কার্ডিয়াক ক্যাথল্যাব ও হার্ট-লাং মেশিনের উদ্বোধন করেন। হৃদরোগের চিকিৎসায় আধুনিক পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে মাসে প্রায় ছয়শো রোগীকে এমস থেকে স্থানান্তর করা হচ্ছে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের রাজ্যের একমাত্র হৃদরোগের হাসপাতাল গান্ধী মেমোরিয়ালে।

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘদিন ধরে গান্ধী হাসপাতাল চিকিৎসক ও পরিকাঠামার সমস্যা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র এমস থেকে দৈনিক প্রায় ২০ জন হৃদরোগীকে স্থানান্তর করা হলে আদৌ চিকিৎসা পরিষেবার গুণমান বজায় রাখা সম্ভব? তা ছাড়া কেনই বা এমস থেকে হৃদরোগীদের স্থানান্তর করা হচ্ছে গান্ধী হাসপাতালে?

গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসকদের অনেকেই অবসর নিয়েছেন। ফলে হাসপাতালে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রাংশ থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এমনকি ২০২৩ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে ওপেন হার্ট সার্জারি। আইসিইউ-র মেডিক্যাল অফিসার ও জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসারের প্রায় এক ডজন পদ শূন্য। অন্যদিকে গত বছর অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি কল্যাণী এমস হাসপাতালে হৃদরোগ বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের অনেকেই মনে করেছিলেন, এ বার গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালের পরিবর্তে কল্যাণী এমসে পাওয়া যাবে হৃদরোগের আধুনিক চিকিৎসা। অথচ সেই চিকিৎসা যে বিনামূল্যে নয়, তা অনেকেই আন্দাজ করতে পারেননি।

গান্ধী হাসপাতালের সুপার চিকিৎসক আশিস মৈত্র বলেন, "আমাদের হাসপাতালে রোগী এলে কোনও ভাবেই তাঁকে ফেরানো হয় না। একাধিক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও আমরা চেষ্টা করি রোগীকে পরিষেবা দিতে। প্রতিদিন অন্তত ১৫-২০ জন রোগী এমস থেকে আমাদের হাসপাতালে 'রেফার' করা হয়।" তাঁর কথায়, "যেহেতু আমাদের হাসপাতালে শুধুমাত্র হৃদরোগের চিকিৎসা হয়। তাই জেলা ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে চিকিৎসার জন্য রোগীরা আসেন।"

'রেফার' নিয়ে এমস কর্তৃপক্ষের দাবি, সেখানে বিনামূল্যে পরিষেবা দেওয়া হয় না। আবার স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের পরিষেবাও সেখানে নেই। সাধারণ এনজিওগ্রাম করতেই খরচ ৮-১০ হাজার টাকা। রোগী ভর্তি থাকলে দিতে হয় শয্যা ভাড়া। বেশিরভাগ ওষুধের খরচ বহন করতে হয় রোগীর পরিবারকে। এছাড়া অস্ত্রোপচারের জন্য আনুষাঙ্গিক খরচ রয়েছে। শুধুমাত্র চিকিৎসকের জন্য কোনও খরচ লাগে না।

এমসের জনসংযোগ আধিকারিক চিকিৎসক সুকান্ত সরকার বলেন, ‘‘এমনটা নয় যে, পরিকাঠামোর সমস্যার কারণে হৃদরোগীদের স্থানান্তর করা হচ্ছে। এমন অনেকেই আছেন যিনি চিকিৎসার ন্যূনতম খরচ বহন করতে পারেন না। তার উপর এখানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে পরিষেবার দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। তাই রোগীদের স্বার্থে কাছাকাছি গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে যাওয়ার
পরামর্শ দেওয়া হয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন