ছবি: সংগৃহীত
সহায়ক মূল্যে প্রান্তিক চাষিরা যাতে সরকারকে ধান বিক্রি করতে পারে তার জন্য প্রশাসনের তরফে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ বারে সরাসরি ধান কিনতে চেয়ে সরাসরি চাষির মোবাইলে এসএমএস পাঠাচ্ছে কৃষি দফতর। কৃষি দফতর সূত্রে খবর, কৃষক বন্ধু প্রকল্পে জেলার ২ লক্ষ ৬৫ হাজার কৃষকের জমির তথ্য-সহ মোবাইল নম্বর রয়েছে। সেই সব মোবাইল নম্বরেএসএমএস পাঠানো হচ্ছে। এ ছাড়াও ধানের সহায়ক মূ্ল্য এবং টোল ফ্রি নম্বরও দেওয়া হচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপসকুমার কুণ্ডু বলছেন, ‘‘কৃষকরা যাতে সহায়ক মূ্ল্যে সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারেন সে জন্য জেলা জুড়ে নানা ভাবে প্রচার চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আওতায় থাকা ২ লক্ষ ৬৫ হাজার কৃষকের মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ৯০ হাজার চাষিকে এসএমএস পাঠানোও হয়ে গিয়েছে।’’
যে চাষিদের তথ্য কৃষি দফতরের কাছে নেই তাঁদের কী ভাবে ধান কেনার বিষয়টি জানানো হবে? উপ কৃষি অধিকর্তা জানান, ধান কেনার বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। খাদ্য দফতর প্রচার করছে। স্থানীয় স্তরেও প্রচার করা হচ্ছে। যে সব কৃষক এসএমএস পাচ্ছেন তাঁরাও পড়শি কৃষকদের খবর দিচ্ছেন।
তবে হরিহরপাড়ার নাজিবুল বিশ্বাস কিংবা নবগ্রামের রতন সরকারেরা বলছেন, ‘‘ধান বিক্রির জন্য এসএমএস এসেছে। তবে বিগত বছরগুলির অভিজ্ঞতা ভাল নয়। ফড়েরাজ বন্ধ করে প্রশাসন আমাদের ধান কিনতে পারবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে আছি।’’
মাঠ থেকে পুরোপুরি ধান উঠতে এখনও দিন পনোরে দেরি আছে। এরই মধ্যে গত শুক্রবার থেকে জেলায় ২৫টি কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্রে ধান কেনা শুরু হয়েছে। ধান কেনার জন্য খাদ্য দফতর কতটা প্রস্তুত তা দেখতে রবিবার ভরতপুর ১ ব্লকে কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র ঘুরে দেখেন মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক জগদীশ প্রসাদ মিনা। পরে জেলাশাসক জানিয়েছেন, ‘‘অভাবি ধান বিক্রি বন্ধ করতে সহায়ক মূল্যে ধান কেনার জন্য কেন্দ্রীয় ধান ক্রয় কেন্দ্র চালু করেছি। ধান বিক্রিতে কোনওভাবেই অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না।’’
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদে এ বছর ৮০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে। সেখানে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মেট্রিক টন। খাদ্য দফতরের এক কর্তা জানান, যত ধান উৎপাদন হয় তার সবটাই কেনা সম্ভব নয়। সরকারের উদ্দেশ্যে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি যেন অভাবি ধান বিক্রি না করেন। আর সে জন্য ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের অগ্রাধিকারে ভিত্তিতে ধান কেনা হবে।