উদ্বিগ্ন: জ্বর-কাশিতে ভোগা শিশুদের নিয়ে। কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে। শুক্রবার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হওয়া শিশুদের মৃত্যু অব্যাহত নদিয়ায়।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার মিলিয়ে অন্তত চারটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের সঙ্গে এ বার যুক্ত হয়েছে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের নামও। যদিও ঠিক কী কারণে এই মৃত্যু, অ্যাডিনোভাইরাস বা অন্য কোনও ভাইরাস সংক্রমণ এর জন্য দায়ী কি না, তা জানা যায়নি।
গত সপ্তাহেই জেএনএমে ছ’টি শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকালে দু’টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। দু’জনেরই বয়স পাঁচ বছরের কম এবং তাদের নিউমোনিয়া-জনিত শ্বাসকষ্ট ছিল। জেএনএমের সুপার চঞ্চলকুমার দলাইকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি। ওই মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “দু’টি শিশুকেই একেবারে শেষ মুহূর্তে আনা হয়েছিল। অভিভাবকদের অনুরোধ করব, শিশুর শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।”
প্রায় একই ঘটনা ঘটেছে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালেও।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিন মাসের একটি শিশুকে পাঠানো হয়েছিল। ঘণ্টা দুই পর বিকালেই তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার সকালে দেড় বছরের আর একটি শিশুকে শান্তিপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়েছিল। ঘণ্টাখানেক চিকিৎসা চলার পর তারও মৃত্যু হয়েছে। রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের সুপার প্রহ্লাদ অধিকারী বলেন, “শিশুটির নিউমোনিয়া ছিল। তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল।”
হাসপাতাল সুপারের আক্ষেপ, দু’টি শিশুকেই অনেক দেরিতে আনা হয়েছিল। চিকিৎসার সময়ই মেলেনি। তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার যে শিশুটি আসে, সে প্রায় সাত দিন ধরে জ্বরে ভুগছিল। শেষ মুহূর্তে তাকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, সেখান থেকে ‘রেফার’ করা হয়েছিল। আরও আগে ভর্তি করা গেলে হয়তো মৃত্যু এড়ানো যেত।” দ্বিতীয় শিশুটির প্রসঙ্গে শান্তিপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পূজা মৈত্র বলেন, “এই ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শিশুদের ভর্তি রাখা হয় না। সকালে জ্বর-সর্দি নিয়ে আসা শিশুটিকে তাই রানাঘাটে পাঠানো হয়েছিল।”
স্বাস্থ্য দফতরের একাংশ বিষয়টিকে যতই লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করুক, পরিস্থিতি যে যথেষ্ট ঘোরালো তাতে সন্দেহ নেই। কল্যাণী জেএনএম সূত্রের খবর, গত দু’তিন দিনের মধ্যে শুক্রবারই সবচেয়ে বেশি চাপ পড়েছে শিশু বিভাগের উপর। ৬৭ শয্যার ওয়ার্ডে ১১৭টি শিশু ভর্তি ছিল। বহু শয্যায় দু'টি করে শিশুও রয়েছে। তবে আশার কথা, তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে আসা শিশুরাও সুস্থ হচ্ছে। এ রকম দু’টি শিশু এ দিন বাড়ি ফিরেছে।