—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুর্শিদাবাদ ছাড়ার পরেই সেই জেলায় এক তৃণমূলকর্মী খুন হয়ে গেলেন। পর পর পাঁচ রাউন্ড গুলি চালিয়ে ওই কর্মীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় নিহতের পরিবার অভিযোগের আঙুল তুলেছে দলেরই কয়েক জন বিক্ষুব্ধ নির্দল কর্মী এবং সমর্থকদের বিরুদ্ধে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রসঙ্গত, গত বুধবারই প্রশাসনিক সভা করতে মুর্শিদাবাদ সফরে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার মধ্যরাতে একটি বিয়েবাড়ি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন মুর্শিদাবাদ থানার আমানিগঞ্জ চর এলাকার বাসিন্দা, স্থানীয় তৃণমূল কর্মী শ্যামবাবু রাই (৩৪)। অভিযোগ, বাড়ি ফেরার পথে তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় জনাদশেক দুষ্কৃতী। তৃণমূলকর্মীকে লক্ষ্য করে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পর পর পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় তারা। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে ওই তৃণমূলকর্মীকে স্থানীয় লালবাগ মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত তৃণমূলকর্মীর পরিবারের বক্তব্য, রাজনৈতিক কারণেই শ্যামবাবুকে খুন করা হয়েছে।
বুধবার মধ্যরাতের এই ঘটনার পর রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে ওই এলাকায়। ঘটনায় মৃত ওই তৃণমূল কর্মীর পরিবারের তরফে নির্দল কর্মী এবং সমর্থকদের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় পরিচিত তৃণমূলকর্মী ছিলেন শ্যামবাবু। ওই এলাকার বেশ কয়েক জন পুরনো তৃণমূলকর্মী গত পঞ্চায়েত ভোটে দলের টিকিট না পেয়ে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। স্থানীয়দের বক্তব্য, তখন থেকেই শ্যামবাবুর সঙ্গে তাঁদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। জমি সংক্রান্ত একটি বিবাদে সপ্তাহখানেক আগে অভিযুক্তদের সঙ্গে শ্যামবাবুর একপ্রস্ত গন্ডগোল হয়েছিল বলেও স্থানীয়দের দাবি। অভিযোগ, বুধবার মধ্যরাতে এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান সেরে ফেরার পথে বাড়ির ঠিক আগেই একটি মন্দির চত্বরে তাঁকে ঘিরে ধরে জনাদশেক দুষ্কৃতী। খুব কাছ থেকে তৃণমূলকর্মীকে লক্ষ্য করে পরপর পাঁচ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। স্থানীয়রা ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় শ্যামবাবুকে উদ্ধার করে তৎক্ষণাৎ লালবাগ মহাকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে শুরু হয় এলাকাজুড়ে তল্লাশি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এখনও কোনও অভিযুক্তের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মৃত তৃণমূলকর্মীর দাদা স্বদেশবাবু রাই বলেন, “প্রত্যেকেই আগে তৃণমূল করত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে তারা নির্দলে যোগ দেয়। ওই নির্দল প্রার্থী এবং সমর্থকদের সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল, যা নিয়ে ভাইয়ের সঙ্গে ওদের মতানৈক্য শুরু হয়। তবে এ ভাবে সবার চোখের সামনে ভাইকে গুলি করে খুন করবে ভাবতে পারিনি।” এই প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”