প্রতীকী ছবি।
স্কুল চত্বরে পড়ুয়াদের চুলের বাহারি কাট ও ফ্যাশন বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপ করলেন তেহট্টের এক স্কুল কর্তৃপক্ষ। রীতিমতো মিটিং ডেকে নোটিস জারি করা হয়েছে— চুলে কোনও ধরনের স্টাইল করে বিদ্যালয় চত্বরে পা রাখা যাবে না।
স্কুলের পরিবেশ এবং ছাত্রজীবনের শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে পড়ুয়াদের উঠতি চুলের ফ্যাশনে, এমনটাই মনে করছেন ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের দাবি, এর জেরে বিঘ্ন ঘটছে ছাত্রদের পড়াশোনা এবং ক্লাসঘরের মনোযোগে। যে কারণে পড়ুয়াদের করণীয় একাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি এই বিষয়টিও জায়গা করে নিয়েছে অভিভাবকদের সঙ্গে স্কুলের বৈঠকে। সেখানে স্থির হয়েছে, স্কুলে পড়ুয়াদের ঠিক ভাবে চুল কেটে আসতে হবে। সেই মাফিক নির্দেশ জারি করেছেন তেহট্টের গ্রামীণ স্কুল নিমতলা বিদ্যানিকেতন কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন পড়ুয়াদের অভিভাবকেরাও।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সকল অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক করেন নিমতলা বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক-সহ স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলে পড়ুয়াদের ফোন আনা নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের চুলের ছাঁট নিয়েও নির্দেশ করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। নিমতলা বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক সুবোধ বিশ্বাস বলেন, “স্কুলের ছাত্রশৃঙ্খলা যাতে নষ্ট না হয়। এর পাশাপাশি, ছোটরা যাতে সমাজমাধ্যম অনুকরণ করে নিজেদের ক্ষতি না করে, সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।” অভিভাবকদের মধ্যে তরুণ বিশ্বাস, কাজল হালদার বলেন, ‘‘অনেক সময়ে বাড়ির কথা শোনে না ছেলেরা। স্কুলের শিক্ষকেরা নির্দেশ দিয়েছেন। আশা করছি, এ বার চুল কেটে স্কুলে যাবে।”
স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুল খুলতেই দেখা যাচ্ছে ব্যাগের মধ্যে লুকিয়ে ফোন আনছে পড়ুয়ারা। এর পাশাপাশি, স্কুল চলাকালীন সমাজমাধ্যমে ভিডিয়ো পোস্ট, সেলফি তোলার হিড়িক পড়েছে। অভিযোগ, স্মার্টফোনের দৌলতে গ্রামীণ স্কুলেও ঢুকে পড়েছে নানা ধরনের ফ্যাশন। বিশেষত, হেয়ার স্টাইলে। অধিকাংশ পড়ুয়া নানা ধরনের স্টাইলে চুল কাটছে। কারও চুলে লাল, নীল, সোনালি রঙের প্রলেপ। কখনও একপাশ ছেঁটে চুল খাড়া করে স্কুলে চলে আসছে পড়ুয়ারা।
এর আগেও করোনা-পূর্ববর্তী সময়ে বিভিন্ন স্কুলে নোটিস জারি করে পড়ুয়াদের হেয়ার স্টাইলে নিষেধাজ্ঞা আনতে দেখা গিয়েছে জেলায়। শিক্ষকেরা মনে করছেন, স্মার্টফোন হাতে আসায় সমাজমাধ্যমের ব্যবহার বেড়েছে। যা পড়ুয়াদের ব্যক্তিত্ব বিকাশের মাঝে অন্তরায় হচ্ছে। একইসঙ্গে পড়ুয়ারা স্কুলে শৃঙ্খলা মেনে না আসার কারণে পরোক্ষে নষ্ট হচ্ছে স্কুলের ভাবমূর্তিও।