—প্রতীকী চিত্র।
স্ত্রী মারা গিয়েছেন দু’বছর আগে। তবুও শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল জামাইয়ের। শুক্রবার বিকেলে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে শ্যালকের স্ত্রীকে হঠাৎই বিয়ের প্রস্তাব দেন জামাই। প্রস্তাব খারিজ হওয়ায় শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জন্মায় ওই ব্যক্তির। শুরু হয় বচসা। এর পর, আচমকা বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন তিনি। শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল জামাইয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হন অভিযুক্ত-সহ ছ’জন। ঘটনাটিকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বাহালনগর গ্রামে। ঘটনাস্থলে সাগরদিঘি থানার পুলিশ গিয়ে আহতদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই অভিযুক্ত-সহ চার জনের মৃত্যু হয়। মারা গিয়েছে একজন শিশুও। বাকিদের চিকিৎসা চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তের নাম রমজান শেখ। তাঁর শ্বশুরবাড়ি বহালনগর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক আগে রমজানের স্ত্রীর মৃত্যু হয়। তবুও তাঁর যাতায়াত ছিল শ্বশুরবাড়িতে। শুক্রবার বিকেলে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে শ্যালকের স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন রমজান। শ্যালকের স্ত্রী সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় রেগে ওঠেন তিনি। শুরু হয় তুমুল বচসা। অভিযোগ, বচসার সময় হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়েন রমজান। এর পরেই শ্বশুরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন তিনি। অভিযুক্ত রমজান-সহ ছ’জন অগ্নিদগ্ধ হন। ঘটনার খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন। তাঁরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। যত ক্ষণে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তত ক্ষণে বাড়ির লোকেদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। খবর দেওয়া হয় সাগরদিঘি থানার পুলিশকে। পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে দ্রুত আহতদের উদ্ধার করে সাগরদিঘি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করান।
এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত-সহ চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, অগ্নিদগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে বেশিরভাগেরই দেহের ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। দু’জনের অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, “অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি সম্ভবত পেট্রোল ঢেলে শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিলেন। ঘটনায় কমপক্ষে ছয় থেকে সাত জন গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। অভিযুক্ত নিজেও গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন।” ইতিমধ্যেই হাসপাতালে এসে পৌঁছেছেন সাগরদিঘির বিডিও সঞ্জয় শিকদার। বিডিও বলেন, “সম্ভবত পেট্রোল ব্যবহার করে আগুন লাগানো হয়েছিল। গোটা ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।”