নিজস্ব চিত্র
বাইক নিয়ে রেল লাইন পেরতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কা থেকে কোনও রকমে রক্ষা পেলেন এক মোটরবাইক চালক। লাইনের উপরে পড়ে থাকা মোটরবাইকটিকে অবশ্য ১০০ মিটার টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল ট্রেনটি। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে আজিমগঞ্জ–ফরাক্কা রেলপথের সাঁকোপাড়া হল্ট ও বল্লালপুর স্টেশনের মাঝে।
ট্রেনটি মালগাড়ি থাকায় সে ভাবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি না হলেও এই দুর্ঘটনার ফলে প্রায় ৪০ মিনিট মালদহগামী নবদ্বীপ-মালদহ এক্সপ্রেস ধুলিয়ান গঙ্গা স্টেশনে ও আজিমগঞ্জগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেন বল্লালপুরে আটকে থাকে। পরে নিউ ফরাক্কা জংশন থেকে রেল পুলিশের কর্মীরা এসে লাইন থেকে মোটর বাইকটিকে সরিয়ে নিয়ে গেলে আজিমগঞ্জ–ফরাক্কা রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ওই রেল পথে দ্বিতীয় রেল লাইন নির্মাণের কাজ চলছে। ফলে ধুলিয়ান থেকে ফরাক্কা পর্যন্ত রেল লাইনের বেশ কিছু আন্ডারপাস বন্ধ রয়েছে। গ্রামবাসীরা আন্ডারপাসের বিকল্প হিসেবে যাতায়াত করতে রেল লাইনের উপর দিয়ে মাটির রাস্তা বানিয়ে নিয়েছেন। তাতেই বিপত্তি বেড়েছে। সাঁকোপাড়া হল্ট ও বল্লালপুর রেল স্টেশনের মধ্যে জয়রামপুরে একই রকম একটি রাস্তা বানানো হয়েছে। এই জয়রামপুরেই রেল লাইনের নীচে রয়েছে আন্ডারপাসটি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দ্বিতীয় রেল লাইন তৈরির জন্য মালপত্র রাখার ফলে বন্ধ রয়েছে জয়রামপুরের বাইপাসটি। ফলে ওই সমস্ত এলাকার বাসিন্দারা জাতীয় সড়কে পৌঁছানোর জন্য প্রায় ৫ কিলোমিটার ঘুরপথ এড়াতে আন্ডারপাসের উপরে মাটির পথ বানিয়ে নিয়ে রেল লাইনের উপর দিয়েই যাতায়াত করছেন। সাইকেল, বাইক এমনকি ছোট গাড়িও যাচ্ছে সে পথ দিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ দিন ঝাড়খণ্ডের পাকুড়ের রসিদ শেখ নামে এক যুবক বাইক চালিয়ে রেললাইন পার হওয়ার চেষ্টা করেন। সেই সময়ে ধুলিয়ানের দিক থেকে একটি মালগাড়ি সাঁকোপাড়ার বাঁক ঘুরে পার হচ্ছিল জয়রামপুর গ্রাম। তখনই মোটরবাইক নিয়ে লাইনে উঠে পড়ে চালক। আচমকা মালগাড়ি চলে এসে আসায় বিপদ বুঝে চলন্ত মোটরবাইকটি লাইনে ফেলে রেখেই ঝাঁপ মারেন রসিদ। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে চালক তখন ব্রেক কষলে মালগাড়িটি বাইকটিকে প্রায় ১০০ মিটার টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। তা দেখে ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান মোটরবাইক চালক। এর পরই খবর যায় নিউ ফরাক্কা জংশনে। সেখান থেকে রেল নিরাপত্তা বাহিনী ও রেল কর্মীরা এসে মোটরবাইকটি লাইন থেকে সরিয়ে নিউ ফরাক্কা স্টেশনে নিয়ে যাওয়ার পরেই ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মালদহ ডিভিসনের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সুখবীর সিংহ জানান, আন্ডারপাস বন্ধ রেখে ঠিকাদারের কাজ করার কথা নয়। কিন্তু কেন এমনটা হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।