Badminton Court

ব্যাডমিন্টন কোর্টে ২৫ লাখ, প্রশ্ন

এ ছাড়াও ১৭ লক্ষ টাকা কোভিড টেস্টিং, স্ক্রিনিং ও ১১.২৫ লক্ষ টাকা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে যন্ত্র কেনার জন্য দেওয়া হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে এই অর্থ বরাদ্দ আরও বেড়েছে কোনও কোনও ক্ষেত্রে।

Advertisement

বিমান হাজরা

জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩০
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

ব্যাডমিন্টন কোর্ট বানাতে তাঁর সাংসদ তহবিল থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন জঙ্গিপুরের তৃণমূল সাংসদ খলিলুর রহমান, যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত বলে অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেস।

Advertisement

তাদের অভিযোগ, ‘আউট অব কনস্টিটুয়েন্সি’র মধ্যে ৫৩ লক্ষ ২৫ হাজার টাকার যে খরচ দেখিয়েছেন খলিলুর, তার মধ্যেই রয়েছে ‘কন্সট্রাকসন অব ইন্ডোর ব্যাডমিন্টন কোর্ট অ্যাট নর্দার্ন সাইড অব সার্কিট হাউজ়, বহরমপুর’-এর জন্য ২৫ লক্ষ টাকা। খরচের এই হিসেব ২০২৩-২৪ সালের। এ ছাড়াও ১৭ লক্ষ টাকা কোভিড টেস্টিং, স্ক্রিনিং ও ১১.২৫ লক্ষ টাকা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে যন্ত্র কেনার জন্য দেওয়া হয়েছে। যদিও পরবর্তীতে এই অর্থ বরাদ্দ আরও বেড়েছে কোনও কোনও ক্ষেত্রে। বিরোধীদের অভিযোগ, সাংসদ তাঁর বাইরের কোনও এলাকার উন্নয়নে এ ভাবে খরচ করতে পারেন না। কারণ বহরমপুর শহর জঙ্গিপুরের সংসদীয় এলাকার মধ্যে পড়ে না।

সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “প্রতিটি সাংসদ সমান ভাবে বছরে ৫ কোটি টাকার তহবিল পান। কাজেই কেউই ‘আউট অব কনস্টিটুয়েন্সি’ সেই তহবিলের টাকা খরচ করতে পারেন না, রাজ্যসভার সদস্যরা ছাড়া। তা ছাড়া ব্যাডমিন্টন কোর্ট তৈরিতে ২৫ লক্ষ টাকা খরচ? এত সমস্যা থাকতে এটাকেই তিনি অগ্রাধিকার দিলেন কিভাবে?”

Advertisement

কংগ্রেসের জঙ্গিপুর মহকুমা সভাপতি হাসানুজ্জামান বাপ্পা বলেন, “এলাকার বাইরে কোনও কাজের জন্য ১ টাকাও খরচ করা যায় না। জঙ্গিপুর তো জেলা হবে ক’দিন পরেই। তা হলে ওই টাকা জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালের জন্যও তো খরচ করা যেত? সাংসদ ৩২ কোটি টাকা খরচ করেছেন কোথায়, চোখে তো পড়ে না।’’

বিজেপির উত্তর মুর্শিদাবাদের জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় ঘোষ বলেন, “এলাকার উন্নয়নের জন্যই কেন্দ্রীয় সরকার সাংসদ তহবিল দিয়ে থাকে। ওই টাকা বহরমপুরে খরচ না করে নিমতিতা বিড়ি শ্রমিক হাসপাতালের জন্য খরচ করলে বিড়ি শ্রমিকদের অনেক উপকার হত। তা ছাড়া বহরমপুর সার্কিট হাউসে অফিসারদের ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য জঙ্গিপুরের সাংসদ ২৫ লক্ষ টাকা দেবেন কেন? মানুষ তো প্রশ্ন তুলছে।’’

খলিলুর জানান, তিনি ৫ বছরে সাংসদ থাকাকালীন সাংসদ তহবিল বাবদ খরচের জন্য পেয়েছেন ১৭ কোটি টাকা। বাকি টাকা পূর্বতন সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় খরচ করতে না পারায় সাংসদ তহবিলের জমে থাকা অর্থ বাবদ পেয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে সাংসদ তহবিল থেকে খরচের পরিমাণ ৩১ কোটি ৭৭ লক্ষ ৯ হাজার ৯২৪ টাকা। খলিলুরের কথায়, ‘‘খেলাধুলোটাও উন্নয়নের অঙ্গ।”

খলিলুরের দেওয়া হিসেব মতো, সাংসদ তহবিল থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করা হয়েছে নবগ্রাম বিধানসভায়, ৫ কোটি ৭৯ লক্ষ ৫৬ হাজার ৫৬০ টাকা। সবচেয়ে কম অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে জঙ্গিপুর অর্থাৎ জাকির হোসেনের বিধানসভা কেন্দ্রে। জঙ্গিপুরের মধ্যে পড়ে রঘুনাথগঞ্জ ১ ব্লক, সুতি ১ ব্লকের দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং জঙ্গিপুর ও রঘুনাথগঞ্জ পুর-শহর। নবগ্রামের পরেই সাংসদ তহবিল থেকে বেশি অর্থ দেওয়া হয়েছে খড়গ্রাম বিধানসভাকে, ৪ কোটি ৭৫ লক্ষ ৮১ হাজার ৩৬৪ টাকা। লালগোলায় খরচ হয়েছে ৪ কোটি ৪৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। সুতিতে ৪ কোটি ৪০ লক্ষ ১৯২০০ টাকা খরচ হয়েছে। রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভা এলাকার প্রাপ্তি ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬০০ টাকা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement