রক্ত দিচ্ছেন বাসেদ। নিজস্ব চিত্র
বেঙ্গালুরুতে কাজে যাওয়া জঙ্গিপুরের ওই দুই রাজমিস্ত্রি চেন্নাইতে হৃদরোগে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে রক্ত দিলেন ৩৩০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে গিয়ে। বুধবার চেন্নাইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে বাইপাস সার্জারি হয়েছে পুরুলিয়া আদালতের এক আইনজীবী দীপ্তিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ‘বি নেগেটিভ’ গ্রুপের দু’ইউনিট রক্তের প্রয়োজনে আটকে গিয়েছিল তাঁর অপারেশন। বুধবার অস্ত্রোপচারের পর দীপ্তিমানের বন্ধু নিখিলেশ মুখোপাধ্যায় চেন্নাই হাসপাতাল থেকে বলেন, “অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। বি নেগেটিভ রক্ত না পাওয়ায় সঙ্কটে পড়েছিলাম। জঙ্গিপুরের দুই নির্মাণ শ্রমিক যুবক বাসেদ শেখ এবং বাবুলাল শেখ দু’ইউনিট রক্ত দিয়ে বেঙ্গালুরুতে ফিরে গিয়েছেন। আমরা তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।”
ওই দুই রাজমিস্ত্রি জঙ্গিপুরের একটি রক্তদাতা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। বেশির ভাগ সময়েই অবশ্য ভিন রাজ্যে কাজে থাকেন। বিরল গ্রুপের ক্যারিয়ার বলে শিবিরে সচরাচর রক্ত দেন না তারা। কিন্তু এমনতর বিপদে পড়া ব্যক্তিদের রক্তও দিয়েছেন বার কয়েক। কারণ ‘বি নেগেটিভ’ রক্তের অভাব রয়েছে।
কিন্তু পুরুলিয়া থেকে জঙ্গিপুরের যোগাযোগ কেমন করে হল?রক্ত নিয়ে দীপ্তিমানের সঙ্কটের খবর জানিয়ে সোমবার পুরুলিয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী ফোন করেন জঙ্গিপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সম্পাদক শাহাদাত হোসেনকে।শাহাদাত জানান, ফোন পেয়েই খোঁজ শুরু হয় ‘বি নেগেটিভ’ রক্তের। হঠাতই জানতে পারেন ‘বি নেগেটিভ’ রক্ত রয়েছে জঙ্গিপুরের মির্ধাপাড়ার বাসেদের। বাসেদ বেঙ্গালুরুতে। সেখানেই ফোন করা হয় তাঁকে রক্ত দেওয়ার কথা জানিয়ে। এক কথায় রক্ত দিতে রাজি হয়ে যান বাসেদ। তাই নয়, তাঁর এক বন্ধুকেও রাজি করিয়ে মঙ্গলবার রাতেই রওনা দেয় চেন্নাই। বুধবার সকালে সেই হাসপাতালে পৌঁছে দু’জনেই রক্ত দেয় তারা দীপ্তিমানের জন্য। এরপরই শুরু হয় দীপ্তিমানের অপারেশন। দুই রক্তদাতাই অবশ্য ইতিমধ্যেই ফিরে গেছেন বেঙ্গালুরুতে তাদের কর্মস্থলে।