নবনির্মাণে জমি পাবে বাগডোগরা

বাগডোগরা বিমানবন্দরের বর্তমান অবস্থা খুব খারাপ। যে-টার্মিনাল বিল্ডিং দিয়ে যাত্রীরা এখন যাতায়াত করছেন, তার ধারণক্ষমতা ঘণ্টায় ৪৫০। আর সোমবার বাগডোগরা থেকে উড়ান ধরেছেন ৫৩৮০ জন যাত্রী।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ ও জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৯
Share:

বাগডোগরা বিমানবন্দর

টাকা নিয়ে বসে আছেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ। আইনি জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে বাগডোগরা বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য জমি দিতে তৎপর হয়েছে রাজ্য সরকার। শিলিগুড়ির ওই বিমানবন্দরের কলেবর বৃদ্ধির জন্য তারা প্রায় ১০৫ একর জমি জোগাড় করে দিচ্ছে। জমির ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ঠিক করতে অর্থ দফতরের সহায়তা চেয়েছে ভূমি দফতর। সেই মূল্যায়ন হয়ে গেলেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের হাতে জমি তুলে দেওয়া হবে বলে জানান নবান্নের কর্তারা।

Advertisement

বাগডোগরা বিমানবন্দরের বর্তমান অবস্থা খুব খারাপ। যে-টার্মিনাল বিল্ডিং দিয়ে যাত্রীরা এখন যাতায়াত করছেন, তার ধারণক্ষমতা ঘণ্টায় ৪৫০। আর সোমবার বাগডোগরা থেকে উড়ান ধরেছেন ৫৩৮০ জন যাত্রী। এক এক ঘণ্টায় ভিড় করেছেন হাজারেরও বেশি যাত্রী। নাভিশ্বাস ওঠার মতো এই অবস্থা থেকে বাঁচতে হলে অবিলম্বে নতুন টার্মিনালের প্রয়োজন। ওই বিমানবন্দরের অধিকর্তা সুব্রমণি পি বলেন, ‘‘দু’-তিনটি উড়ানের জন্য এই টার্মিনাল তৈরি হয়েছিল। এখন দিনে ৩৭টি উড়ান ছাড়ছে। কয়েক দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে আশ্বাস দিয়েছেন, জমি পেতে বেশি দেরি হবে না।’’ নতুন টার্মিনালের পাশাপাশি দু’টি নতুন ট্যাক্সিওয়ে এবং ১৬টি নতুন পার্কিং বে তৈরি হবে।

জমি-জটে বেশ কয়েক বছর ধরে বাগডোগরা বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ আটকে আছে। সম্প্রসারণের নকশা নিয়ে আলোচনার পরে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, ১০৫ একর জমি পেলে তাঁরা কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন। তার পরে সেই জমি সংগ্রহে নামে রাজ্য সরকার। ভূমি দফতরের খবর, বিমানবন্দরের গা ঘেঁষে থাকা গঙ্গারাম চা-বাগান থেকে ৯৪ একর জমি নেওয়া হয়েছে। এই জমি সরকারের। তা বাগান পরিচালকদের দীর্ঘকালীন লিজে দেওয়া হয়েছে। ২২০০ একরের চা-বাগানটি এখন পরিচালনা করে ডানকান গোষ্ঠী।

Advertisement

প্রাথমিক ভাবে বাগানের লিজগ্রহীতা জমি দিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু মাঝপথে তিনি বেঁকে বসেন। কলকাতা হাইকোর্টে মামলাও করেন তাঁরা। রাজ্যের তরফে তাঁকে বার্তা দেওয়া হয়, চা-বাগানের জমি রাজ্যের। লিজ দেওয়া ২২০০ একরের মধ্যে মাত্র ৯৪ একর ফেরত নিতে হচ্ছে। তার জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। রাজ্যের কড়া বার্তা পেয়ে মামলা আর বেশি দূর গড়ায়নি। রাজ্যের পক্ষেই রায় এসেছে। তার পরেই নতুন করে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ঠিক করে বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষের হাতে জমি তুলে দিতে সচেষ্ট হয়েছে সরকার।

রাজ্যের এক কর্তা জানান, ক্ষতিপূরণ মনের মতো না-হলে ফের তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষকে সেটা জানিয়ে দেওয়া হবে। তবে জট কেটেছে। ভূমি দফতরের খবর, গঙ্গারাম চা-বাগানের ৯৪ একর জমি ছাড়াও বাকি ১১ একর পেতে কিছু রায়তি জমি নিতে হচ্ছে সরকারকে। সম্প্রসারণের কাজের জন্য প্রতিরক্ষা দফতরের কয়েক একর জমিও নেওয়া হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বা রায়তি জমির মালিকেরা অবশ্য বিমানবন্দর সম্প্রসারণের জন্য জমি দিতে রাজি হয়েছেন আগেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement