অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে উদ্বেগ! ফাইল ছবি।
জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে এখনও রাজ্য জুড়ে সক্রিয় অ্যাডিনো-সহ অন্যান্য ভাইরাস। যার জেরে অব্যাহত শিশুমৃত্যুও। করোনাকালের থেকে শিক্ষা নিয়ে ভাইরাস সংক্রমণে রাশ টানতে আরও তৎপর হল নবান্ন। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখতে এবং রাজ্য জুড়ে উপযুক্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ‘টাস্ক ফোর্স’ গড়ল রাজ্য সরকার।
গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় তাঁর বক্তৃতায় অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। প্রয়োজনে আবারও সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধও করেছিলেন তিনি। শুক্রবার বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অ্যা়ডিনো ভাইরাসের পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের বিবৃতি দাবি করেন। কিন্তু সরকারের তরফে কোনও বিবৃতি না দেওয়া হলেও, শনিবার টাস্ক ফোর্স গঠনের সিদ্ধান্তের কথা বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিল নবান্ন।
শনিবার নবান্নে রাজ্যের অ্যাডিনোভাইরাসের পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয় মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর নেতৃত্বে। বৈঠক শেষে এই টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতির পর্যালোচনায় নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই টাস্ক ফোর্স বৈঠক বসবে। সেখানে প্রশাসনিক কর্তাদের পাশাপাশি রাখা হয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরও। রাজ্যের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর এবং নারী ও শিশুকল্যাণ দফতরের প্রধান সচিবেরা ছাড়াও টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। অতিমারির সময় রাজ্যে যে টাস্ক ফোর্স তৈরি হয়েছিল, সেখানেও ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন।
গত দু’মাসে জ্বর ও শ্বাসকষ্টের উপসর্গ-সহ অসুখের কারণে রাজ্যে একশোর কাছাকাছি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে সব মৃত্যুর নেপথ্যেই যে অ্যাডিনোভাইরাস, তা অবশ্য নয়। কিন্তু রিপোর্ট বলছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত শিশুদের নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, এ রাজ্যে সংক্রমণের ৩৮ শতাংশেরই কারণ অ্যাডিনোভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে মহকুমা থেকে মেডিক্যাল কলেজ— সব স্তরের হাসপাতালেই এখন সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা করে ফিভার ক্লিনিক এবং ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন’ (এআরআই) ক্লিনিক চালানোর নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
বিজ্ঞপ্তিতে নবান্ন জানিয়েছে, অ্যাডিনো পরিস্থিতিতে ২৪ ঘণ্টা নজরদারি চালাতে ‘কন্ট্রোল রুম’ গড়া হয়েছে। এই ধরনের ভাইরাসে আক্রান্তদের কী ভাবে চিকিৎসা করতে হবে, সেই সংক্রান্ত গাইডলাইনও দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে। পাশাপাশিই, হাসপাতালগুলিতে যাতে অক্সিজেন ও পেডিয়াট্রিক ভেন্টিলেটর উপযুক্ত পরিমাণে থাকে, তা নিশ্চিত করতেও বলা হয়েছে। রাজ্যের সব ধরনের হাসপাতালের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, সুপার, অ্যাসিস্ট্যান্ট, ডেপুটি সুপার, শিশুরোগ, ক্রিটিক্যাল কেয়ারের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, শিশুদের এআরআই-এর চিকিৎসা পরিষেবায় যুক্ত কর্মী, জেলার মুখ্য, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে অনির্দিষ্টকালের জন্য। চালু হয়ে হেল্পলাইন নম্বর — ১৮০০৩১৩৪৪৪২২২।