গর্ভ ভাড়ার কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে নবান্ন। ফাইল চিত্র।
নিজের সম্মতি ‘সারোগেসি’ বা গর্ভ ভাড়া দেওয়ার প্রথম ও প্রধান শর্ত। তবে এক বার গর্ভ ভাড়া দিলে দ্বিতীয় বার অনুমতি মিলবে না। অর্থাৎ অন্যান্য শর্ত পূরণ করলেও কোনও মহিলা এক বারের বেশি গর্ভ ভাড়া দিতে পারবেন না। আবার স্রেফ ইচ্ছার বশে সারোগেসির আশ্রয় নেওয়া যাবে না। সারোগেসি নিয়ে নির্দেশিকায় এগুলো স্পষ্ট করে দিল রাজ্য সরকার। গর্ভ ভাড়ার কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী বৃহস্পতিবার নির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ বা নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে নবান্ন।
নতুন নির্দেশিকায় অনিয়ম কমবে বলেই সারোগেসি আইনের খসড়া বিলের অন্যতম উপদেষ্টা তথা বন্ধ্যত্ব রোগের চিকিৎসক সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারের আশা। তিনি বলেন, ‘‘মূলত মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাতে সারোগেসি নিয়ে অনেক অনিয়ম হয়। বঙ্গে ততটা হয় না। তবু নির্দিষ্ট নির্দেশিকা প্রয়োজন।’’ নয়া নির্দেশিকা বলছে, শারীরিক প্রতিবন্ধকতা বা স্বাস্থ্য-সমস্যা থাকলে তবেই সারোগেসির আশ্রয় নেওয়া যাবে। তার জন্য নিঃসন্তান দম্পতিকে জেলা স্তরের সারোগেসি বিষয়ক মেডিক্যাল বোর্ডের শংসাপত্র নিতে হবে। তাতে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন রাজ্য স্তরের ‘সারোগেসি অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অথরিটি’। যদি কোনও মহিলার জরায়ু-সমস্যা থাকে বা সহায়ক প্রজনন প্রযুক্তিতেও গর্ভধারণ ব্যাহত হয়, অসুস্থতায় গর্ভধারণঝুঁকির হয় বা বার বার গর্ভ নষ্ট হয়ে যায়, তিনি গর্ভ ভাড়া নিতে পারবেন। এর জন্য সিঙ্গল মাদার বা বিবাহিত হতে হবে। ‘লিভ টুগেদার’-এর ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য নয়। কোনও দম্পতির সন্তান জীবিত থাকলে তাঁরা গর্ভ ভাড়া নিতে পারবেন না। ‘সারোগেট মাদার’ বা গর্ভদাত্রী মাকে অবশ্যই বিবাহিত এবং অন্তত জীবিত এক সন্তানের জননী হতে হবে। ফিট সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে তাঁকেও। তাঁর তিন বছরের স্বাস্থ্য বিমার দায়িত্ব নিতে হবে গর্ভ ভাড়া নিতে ইচ্ছুক দম্পতিকে। তাঁদের মধ্যে স্বামীর বয়স ২৬-৫৫ এবং স্ত্রীর বয়স ২৩-৫০ বছর হতে হবে। অল বেঙ্গল প্যারামেডিক্স ও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট সংগঠনের সভাপতি মনোজ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গর্ভধারণ যাতে বাণিজ্যিক হয়ে না-ওঠে, তার জন্য এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।’’