রাম-নামের তাণ্ডবে চিন্তা সংখ্যালঘু মহলে

সিদ্দিকুল্লা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘অস্ত্র মিছিল করে তাণ্ডব একেবারেই অনুচিত হয়েছে। তৃণমূলের মধ্যেও যাঁরা এমন কিছু করেছেন, প্রশাসন নিশ্চয়ই তাঁদের চিহ্নিত করবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৬:০৫
Share:

সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছিলেন, প্রথমে সাপ হয়ে কামড়াব, তার পরে ওঝা হয়ে বিষ ঝাড়ব— এই হচ্ছে তৃণমূলের নীতি! রাজ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে মুসলিম সংগঠনগুলির বক্তব্যে তৃণমূলের ওই দ্বৈত ভূমিকার কথাই যেন উঠে আসছে।

Advertisement

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির অভিযোগ, তিনি সংখ্যালঘু তোষণের নীতি নিয়ে চলেন। এ বার সংখ্যাগুরু ভাবাবেগকে ধরতে চেয়ে রামনবমীতে তৃণমূল যখন মেতে উঠেছে, তখন অশনি সঙ্কেত দেখছে নানা মুসলিম সংগঠন। রানিগঞ্জ, পুরুলিয়ার মতো কিছু ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন। কয়েকটি সংগঠন সরাসরিই তৃণমূলকে দায়ী করছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবারের হাত শক্ত করার জন্য। বাকিরা মনে করছে, শাসক দল হিসেবে তৃণমূলের কাছে আরও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশিত ছিল। সতর্ক হওয়া উচিত ছিল প্রশাসনেরও।

এমতাবস্থায় খানিকটা উভয় সঙ্কটে পড়েছেন সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে তাঁর পক্ষে তৃণমূলের কড়া সমালোচনা করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের রাজ্য সভাপতি হিসেবে তৃণমূলের কাজ পুরোপুরি মেনে নেওয়াও তাঁর পক্ষে কঠিন! সিদ্দিকুল্লা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘অস্ত্র মিছিল করে তাণ্ডব একেবারেই অনুচিত হয়েছে। তৃণমূলের মধ্যেও যাঁরা এমন কিছু করেছেন, প্রশাসন নিশ্চয়ই তাঁদের চিহ্নিত করবে।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাংলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ থাকবে। বিজেপি-আরএসএসের উদ্দেশ্য সফল হবে না।’’ মুসলিম লিগের রাজ্য সভাপতি শাহেনশা জাহাঙ্গিরও বলেন, ‘‘কিছু ঘটনায় শান্তি বিঘ্নিত হয়েছে। প্রশাসনের আরও সতর্ক থাকা উচিত ছিল। তবে আমাদের আশা, কিছু ব্যক্তি বা সংগঠনের অপচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হবে না।’’

Advertisement

রামনবমীকে ঘিরে হিংসার বিচারবিভাগীয় তদন্ত, দোষীদের শাস্তি এবং নিহত ও আহতদের পরিজনপিছু ১০ ও ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে এসইউসি। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর দ্বারস্থ হয়েছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের অভিযোগ, রানিগঞ্জে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে’ অশান্তি চলতে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সক্রিয় হয়েছে গোলমাল শেষ হওয়ার পর। সোমবারই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহকে ফোনে ঘটনা জানিয়েছিলেন বাবুল। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্র রাজ্যের কাছে ওই ঘটনার রিপোর্ট চাইতে পারে। কিন্তু রাজ্য তো অসত্য রিপোর্ট পাঠাবে!’’ তাই ‘প্রকৃত ঘটনা’ জানাতে এ দিন রাজভবনে গিয়েছিলেন বাবুল এবং বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। নিয়ে গিয়েছিলেন রানিগঞ্জে আক্রান্ত কয়েকটি পরিবারকেও।

তৃণমূলের মহাসচিব এবং রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘বাবুল গলা দিয়ে গান, চোখ দিয়ে দেখেন না! নিষ্ক্রিয় থাকলে পুলিশ কি আহত হতো?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement