কিছুই করেননি মমতা, তোপ মুসলিম নেতাদের

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল সংখ্যালঘুদের বন্ধু সেজে বেড়িয়েছেন, কাজের কাজ কিছুই করেননি বলে দাবি করলেন একাধিক মুসলিম সংগঠনের নেতা। ওই নেতাদের দাবি, মমতা সংখ্যালঘু ভোট পেয়েই ক্ষমতায় এসেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৫ ০৩:০৪
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল সংখ্যালঘুদের বন্ধু সেজে বেড়িয়েছেন, কাজের কাজ কিছুই করেননি বলে দাবি করলেন একাধিক মুসলিম সংগঠনের নেতা। ওই নেতাদের দাবি, মমতা সংখ্যালঘু ভোট পেয়েই ক্ষমতায় এসেছেন। কাজ না হলে পরের ভোটে সংখ্যালঘুরা মমতাকে সমর্থন করবেন না।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য হামেশাই বলে থাকেন, তাঁর সরকার সংখ্যালঘু উন্নয়নের ১০০ ভাগ কাজ করেছে। কিন্তু শনিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সংবাদিক বৈঠক ডেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা সেই দাবি কার্যত উড়িয়ে দিলেন। তাঁদের পাল্টা দাবি, মমতা মুসলিমদের জন্য সহানুভূতি (হামদর্দি) দেখানোর ভান করেছেন। কিন্তু উন্নয়নের কাজ কিছুই করেননি।

একই সঙ্গে তাঁদের হুমকি, পরিদর্শন হয়ে যাওয়া সব মাদ্রাসার অনুমোদন না মিললে তাঁরা আমরণ অনশনে বসবেন। এমনকী, সংখ্যালঘু দফতরের জেলা অফিসগুলিতেও তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। নেতারা জানান, মুখ্যমন্ত্রী লণ্ডন থেকে ফিরলে তাঁর সঙ্গে দেখা করে এই কর্মসূচি জানিয়ে আসা হবে। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে সংখ্যালঘু উন্নয়নে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে আসন্ন ভোটে রাজ্যের মুসলিমরা মমতার দলকে সমর্থন করবেন না।

Advertisement

মুসলিম নেতাদের অভিযোগ কি?

অনুমোদনহীন মাদ্রাসা শিক্ষক সংগঠনের সভাপতি নুরুল ইসলাম এ দিন জানান, ২০০৯ সালে তৎকালীন বাম সরকার ৪০০ মাদ্রাসার অনুমোদন দেবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। তাতে ছ’হাজার আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ১৪০টি মাদ্রাসার অনুমোদন দেয় আগের সরকার। কিন্তু তারপর আর এক চুলও কাজ এগোয়নি। গত চার বছরে মাত্র একটি মাদ্রাসা অনুমোদন পেয়েছে। সেটি জঙ্গলমহলে।’ ওই শিক্ষক নেতার অভিযোগ, সরকারি আধিকারিকেরা বাকি ২৫৯টি মাদ্রাসা পরিদর্শনের কাজ সেরে ফেললেও অনুমোদন আটকে রয়েছে। গত ছ’মাস ধরে মমতার মন্ত্রিসভার দুই সদস্য ফিরহাদ হাকিম ও গিয়াসুদ্দিন মোল্লা কেবলই আশ্বাস দিয়ে চলেছেন।

রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী গিয়াসুদ্দিন সাহেব অবশ্য এই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ সব নিয়ে আমার সঙ্গে কেউ কোনও দিন দেখা করেননি। তাই প্রতিশ্রুতি দেওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না।’’ আর পুরমন্ত্রী ফিরহাদ বলেছেন, ‘‘অনুমোদনহীন মাদ্রাসাগুলিকে স্বীকৃতি দিতে সরকারের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু স্বীকৃতির সঙ্গে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষমতা নেই আমাদের।’’ তাঁর বক্তব্য, অনুমোদনহীন মাদ্রাসাগুলিকে ‘সর্বশিক্ষা অভিযান’-এর আওতায় আনার চেষ্টা করেছিল সরকার। কিন্তু কেন্দ্র ওই প্রস্তাব মানতে রাজি নয়। সেখানেই বিষয়টি আটকে আছে।

এ দিন ওই সাংবাদিক বৈঠকে বসেই তাঁদের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ করেছেন সংখ্যালঘু সংগঠন মিল্লি ইত্তেহাদ পরিষদ ও মজলিসে মুসলিম মসওয়ার-এর দু‌ই নেতা আব্দুল আজিজ ও কামরুদ্দিন মালিকও। আজিজ সাহেবের অভিযোগ, বাম আমলে ইউনানি মেডিক্যাল কলেজ আধুনিকীকরণের ৯০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার বাকি ১০ শতাংশের এক ছটাকও করেনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement