একে একে মাইকের সামনে দাঁড়ালেন সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিনয় বর্মণ, শান্তা ছেত্রী, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এঁদের মধ্যে কয়েক জন সারদা ও নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত। কিন্তু মঞ্চে থেকেও শুক্রবার তৃণমূলে ২১শে-র সমাবেশে বক্তৃতার জন্য ডাক পেলেন না মুকুল রায়। কিছু দিন আগেও যিনি তৃণমূলের অলিখিত ‘নাম্বার টু’ ছিলেন!
সারদা-কাণ্ডে মুকুলকে ডেকে সিবিআইয়ের জেরা করে ছেড়ে দেওয়ার পরে দলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। তৃণমূল ছেড়ে মুকুল নতুন দল গড়বেন কি না, এই জল্পনায় তখন মশগুল ছিল রাজ্য রাজনীতি। সেই সময়ে ২০১৫ সালের ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশে হাজিরই ছিলেন না মুকুল। সে দিন ছিলেন দিল্লিতে। গত বছর ফের বক্তৃতা করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। কিন্তু এখন আবার দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শীতল। সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদে থাকলেও দল পরিচালনায় এখন তাঁর গুরুত্ব নেহাতই অকিঞ্চিৎকর। সেই সমীকরণেই বক্তা তালিকায় এ দিন তাঁর নাম থাকল না বলে তৃণমূল সূত্রের ব্যাখ্যা। মুকুলবাবু অবশ্য এই নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের শাসক দলের যে সব নেতা-মন্ত্রীকে গোয়েন্দা সংস্থার নোটিস পাঠাচ্ছে, সেই তালিকায় মুকুলের নাম এক বার উল্লেখ করেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুকুল যেমন বক্তৃতা করতে ডাক পাননি, তেমনই মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে এসেও মঞ্চে ওঠেননি সারদা-কাণ্ডে আর এক অভিযুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। মঞ্চের কাছে ফুটপাথের একটি ফলের দোকানের টুলে এ দিন গিয়ে বসেছিলেন তিনি। তৃণমূল সূত্রের খবর, মদন ফুটপাথে বসে আছেন জানতে পেরে বক্সী তাঁকে মঞ্চের পিছনে ডেকে পাঠান। সেখানে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও ফিরহাদও তাঁকে মঞ্চে উঠতে বলেন। কিন্তু মদন ওঠেননি। তাঁর কথায়, ‘‘ঘামে ভিজে আমাকে বিশ্রী লাগছিল। মঞ্চে কত অভিনেতা-অভিনেত্রী ছিলেন। সেখানে কি এমন ভাবে ওঠা যায়!’’ ফোনে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নেওয়ার সময়ে তাঁকেও একই কথা বলেছেন মদন।