গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার অভিযোগ করেছে বিজেপি। কিন্তু সাংসদ মহুয়া মৈত্র স্পষ্ট জানালেন, যদি কেউ আঘাত পেয়ে থাকেন, তা হলে সেই ব্যক্তি তিনি নিজেই। আঘাত করার জন্য ক্ষমা যদি চাইতেই হয়, তবে তিনি চাইবেন না। তাঁর কাছেই ক্ষমা চাওয়া উচিত।
কলকাতার একটি সভায় তাঁকে করা প্রশ্নর উত্তরে দেবী কালীকে পুজোর উপচারে দেওয়া খাবার এবং পানীয় নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন মহুয়া। যার প্রেক্ষিতে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদকে গ্রেফতারির দাবি তুলেছে বিজেপি। বাংলার বিজেপি নেতা তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে জানিয়েছেন, বাংলার শাসক দল মহুয়ার বিরুদ্ধে দশ দিনে কী পদক্ষেপ করে তা দেখে তিনি বিষয়টি নিয়ে হাই কোর্টে যাবেন। সেই দশ দিনের তিন দিন ইতিমধ্যেই অতিক্রান্ত। এর মধ্যেই একটি টিভি সাক্ষাৎকারে মহুয়া জানালেন, তিনি যা বলেছেন, তা বদলানোর কোনও প্রশ্ন নেই। কারণ তিনি ভুল কিছু বলেননি।
মহুয়া ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আমি আমার বক্তব্য থেকে পিছিয়ে আসব না। কারণ আমি ভুল বলিনি। বরং এটা আমার কাছে একটা সুবর্ণসুযোগ বিজেপিকে বলার যে, বাংলা কী ভাবে কালী পুজো করবে তা তারা বাইরে থেকে এসে আমাদের শেখাতে পারে না। ওদের হিন্দুত্ববাদের সংকীর্ণ ধারণা আমাদের পুজোর রীতি রেওয়াজের উপর চাপিয়ে দিতে পারে না।’’
মহুয়া এর আগেও তাঁকে নিয়ে হওয়া কালী বিতর্কে আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে কালীর উপাসক বলে জানিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে ওই সাক্ষাৎকারেও তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হলে তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘‘আমি কালীর ভক্ত। এত দিন বলার প্রয়োজন মনে করিনি। কারণ বলার দরকার হয়নি। এখন বলতে হচ্ছে। তবে কালীর ভক্ত হিসেবে আমি মনে করি শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হবে। আর আমি যা বলেছি তার একটি বর্ণও অসত্য নয়।’’
মহুয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁকে যদি বলা হয় তিনি কারও ব্যক্তিগত ভাবাবেগে আঘাত করেছেন, তা হলেও কি নিজের মন্তব্য থেকে সরে আসবেন না? বা ক্ষমা চাইবেন না? জবাবে মহুয়ার উত্তর, ‘‘ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, বরং আমার কাছেই ক্ষমা চাওয়া উচিত। কারণ আঘাত যদি কেউ পেয়ে থাকে সে আমি। আমারই ভাবাবেগে আঘাত করা হয়েছে। আমি সত্যি কথা বলেছি। তার জন্য আমাকে আক্রমণ করা হচ্ছে।’’