মৌসুমী কয়াল।
রাজ্যের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে তাঁর নানা বিস্ফোরক মন্তব্য লেখা হচ্ছিল ফেসবুকে। প্রতিবাদের ‘মুখ’ ভেবেই তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব জমিয়েছিলেন সমাজের নানা বিশিষ্ট জন। তাঁর ছবিতে ‘লাইক’ আর ‘কমেন্ট’ও আসছিল প্রচুর। তবে, এ সবের কিছু জানতেন না তিনি নিজেই। বিধাননগর কমিশনারেটের কাছে এফআইআর করে কামদুনির প্রতিবাদী মুখ মৌসুমী কয়াল জানিয়েছেন, তাঁর নাম ও ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ভুয়ো প্রোফাইল তৈরি করা হয়েছে। তাতে চলছে আপত্তিকর লেখালেখি। অপরাধীর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সম্প্রতি ফেসবুকের একটি আপত্তিকর পোস্ট নিয়ে গোলমাল বাধে বাদুড়িয়া-বসিরহাটে। যার জেরে উত্তর ২৪ পরগনায় বেশ কিছু দিন ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখে প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের এই প্রবণতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এত কাণ্ডের পরেও তাঁর নাম ভাঁড়িয়ে বিভিন্ন উস্কানিমূলক ও রাজনৈতিক কথাবার্তা পোস্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মৌসুমি। তাঁর দাবি, তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন।
মৌসুমী জানান, শনিবার অফিসে এক সহকর্মী তাঁকে বলেন, ‘তুমি ফেসবুকে এমন ভয়ানক কথাবার্তা লিখছ কেন?’ মৌসুমীর দাবি, ফেসবুকে তাঁর কোনও অ্যাকাউন্টই নেই। আর এক সহকর্মী জানান, ফেসবুকে মৌসুমীর নামে প্রোফাইল আছে। রয়েছে তাঁর ছবিও। অফিসের সহকর্মীরাই ফেসবুকে খোঁজ করে দেখেন, কামদুনির প্রতিবাদী মাস্টারমশাই প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছবি দিয়ে মৌসুমীর প্রোফাইল রয়েছে। সেখানে নানা রাজনৈতিক ও আপত্তিকর কথাবার্তা লেখা হচ্ছে। মৌসুমীর কথায়, ‘‘দেখেই চমকে যাই! আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য নই। কারও বিরোধীও নই।’’ এর পরেই রবিবার বিমানবন্দর থানায় এফআইআর করেন তিনি। মৌসুমী বলেন, ‘‘এ শুধু আমাকে অপদস্থ করাই নয়, আমার নাম করে অনেক মানুষকে অপমানও করা হয়েছে। আমি দোষীর শাস্তি চাই।’’
মৌসুমীর ঘটনাটি নিয়ে বিধাননগরের ডেপুটি কমিশনার (সদর) সন্তোষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘অভিযোগের তদন্ত চলছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে। সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞেরা তদন্ত করে দেখবেন। যে ‘আই পি’ ঠিকানা থেকে প্রোফাইলটি
তৈরি করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হবে। এ ছাড়া, কোন কম্পিউটার বা ল্যাপটপ বা মোবাইল থেকে অ্যাকাউন্টটি তৈরি হয়েছে, তারও খোঁজ করবেন বিশেষজ্ঞেরা।