ছবি: সংগৃহীত।
ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীর সংখ্যা ৮০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী নাগরিকদের সংখ্যার নিরিখে মুর্শিদাবাদ জেলা সবচেয়ে এগিয়ে। দক্ষিণ এবং উত্তর ২৪ পরগনা রয়েছে যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্থানে। চলতি পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী জেলাগুলি থেকে ভোটার কার্ড সংশোধনের আবেদনপত্রের হার দেখে বিস্মিত কমিশন-কর্তারা।
গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়ায় ভোটার কার্ড বা তালিকায় থাকা ভুল সংশোধনের জন্য আবেদন করছেন সাধারণ মানুষ। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটার কার্ড সংশোধনের জন্য কমবেশি ৪০ লক্ষ মানুষ আবেদন করেছেন কমিশনের কাছে। নাম তোলার জন্য আবেদনকারীর সংখ্যাও ৩০ লক্ষের আশেপাশে। আবার তিন লক্ষের মতো নাম বাদ গিয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে অন্যান্য সংশোধনের আর্জি। কমিশন-কর্তাদের দাবি, সব মিলিয়ে অতীতের সব রেকর্ড কার্যত ভেঙে দিয়েছে এ বারের সংশোধন-প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীর সংখ্যা।
আনুমানিক ৪০ লক্ষ আবেদনের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলাতেই এই সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ। তার মধ্যে ৯ লক্ষ ৬৭ হাজার শুধুমাত্র সংশোধনের জন্য আবেদন করেছেন। ২ লক্ষ ৬৫ হাজার নতুন ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন। জেলা প্রশাসনও দাবি করেছে, নির্ভুল ভোটার তালিকা তৈরির জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যোগ্যদের কাজ নেই, মানলেন শিক্ষামন্ত্রীই
শনিবার ছিল জাতীয় ভোটার দিবস। সেই উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রথম এবং নতুন ভোটারদের হাতে ভোটার কার্ড তুলে দেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাব এবং স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিনের অনুষ্ঠানের অন্যতম স্লোগান ছিল, আরও শক্তিশালী গণতন্ত্র এবং নির্বাচনী সাক্ষরতা। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক বলেন, ‘‘ভোটার তালিকা ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্টা চলছে। নির্বাচনী সাক্ষরতার সঙ্গে যুক্ত ক্লাবগুলিকে আরও মজবুত করার লক্ষ্যে কমিশন কাজ করছে।’’ আলাপনবাবুর কথায়, ‘‘একটা সময় ছিল, যখন ১০০ জনে ভোট দিতে পারতেন মাত্র ১৩ জন। একমাত্র শিক্ষিত এবং করদাতাদেরই ভোটাধিকার ছিল। ১৯৫২ সালের নির্বাচন মুগ্ধ হয়ে দেখেছিল গোটা বিশ্ব। সেই নির্বাচনে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ধনী, গরিব নির্বিশেষে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ভোটাধিকার পেয়েছিলেন।’’
জাতীয় ভোটার দিবসকে কেন্দ্র করে এ দিন টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী নিখেছেন, ‘‘আমাদের দেশ পৃথিবীর মধ্যে সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্র, যেখানে ভোটাররাই শেষ কথা। ভোটদাতাদের আমরা কুর্নিশ জানাই। আমরা সবাই নাগরিক।’’ প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রাজ্যপালের বার্তা, ‘‘গণতন্ত্রে আমাদের বিশ্বাস আরও মজবুত করতে হবে। গণতন্ত্রে ভোটাধিকার প্রাথমিক শর্ত। ভোটাধিকার প্রয়োগে আমাদের বাধাহীন, নির্বিঘ্ন এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের পরিবেশ রাখতে হবে। আমরা সকলেই সেই লক্ষ্যে কাজ করব।’’