ফাইল চিত্র।
একশো দিনের কাজ প্রকল্পে গতি বাড়াতে আরও বিভিন্ন দফতরকে জুড়ছে রাজ্য সরকার।
এই প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব মূলত গ্রাম পঞ্চায়েতের। কিন্তু তার সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতি, উদ্যানপালন, পশুপালন, সেচ এমনকী সমবায় দফতরকেও জুড়ছে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। ওই দফতরগুলিও পঞ্চায়েতের মতোই পরিকল্পনা তৈরি করতে পারবে। তাদেরও স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি এবং কর্মসংস্থানমুখী প্রকল্প করতে বলা হয়েছে বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রের খবর।
পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তা জানান, কাজের গতি বাড়াতেই এটা করা হয়েছে। না হলে ওই প্রকল্পে দেশের মধ্যে সেরা হিসেবে রাজ্যের জায়গা ধরে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। হাওড়া জেলাতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দফতর কাজের প্রস্তুতি শুরু করেছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে ওই প্রকল্পে শ্রমদিবস সৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গ ছিল রাজ্যের সেরা। কিন্তু ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত শ্রমদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যে রাজ্য একটু পিছিয়ে আছে। কারণ, মাটি কাটার কাজে বিস্তর কাটছাঁট হয়েছে। গত জুনে কেন্দ্র জানিয়ে দেয়, মাটি কাটার কাজ করা যাবে না। ব্যক্তিগত পুকুর খোঁড়ার কাজও বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই দু’টি কাজেই বেশি শ্রমদিবস সৃষ্টি হত। কিন্তু তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পঞ্চায়েতগুলিতে কাজের পরিমাণ কমে। তারপরে অবশ্য সীমিত কিছু ক্ষেত্রে মাটি কাটার কাজের অনুমতি দেয় কেন্দ্র। কিন্তু তাতেও খুব একটা শ্রমদিবস বাড়েনি।
এই ঘাটতি পূরণ করার জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে পঞ্চায়েতগুলিকে বার বার বলা হয় কাজের অন্য ক্ষেত্রের অনুসন্ধান করতে। স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি বা কর্মসংস্থানমুখী প্রকল্পের অনুসন্ধান করতেও বলা হয় তাদের। কিন্তু তাতে খুব একটা আগ্রহ দেখা যায়নি পঞ্চায়েতগুলিতে। রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তা জানান, বন দফতরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারি জমিতে বনসৃজন করে জবকার্ডধারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। কিন্তু পঞ্চায়েতগুলিকে এই কাজে খুব কার্যকর ভাবে যুক্ত করা যায়নি। তারা শুধু মাটি কাটা আর পুকুর কাটার কাজেই আগ্রহী। পঞ্চায়েতের এই অনাগ্রহের কারণেই সরকারের বিভিন্ন দফতরকে সরাসরি এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, নতুন দফতরগুলি যে সব প্রকল্প রচনা করবে, বিডিওরা তা দেখে কাজটি করার অনুমতি দেবেন। আগে পঞ্চায়েত সমিতি একশো দিনের কাজ করতে পারত না বললেই চলে। এ বারে তারাও এই প্রকল্পে সরাসরি পঞ্চায়েতের মতই প্রকল্প রচনা করবে। জেলা সমবায় দফতরের রেজিস্ট্রাররা তাঁদের অধীনে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে প্রকল্প রূপায়ণ করতে পারবেন। এমনকি, ব্লকগুলিকে বলা হয়েছে বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকেও প্রকল্প রূপায়ণকারী সংস্থার মতো ব্যবহার করাতে। তবে যে দফতরই প্রকল্প রূপায়ণ করুক না কেন, তাদের শ্রমিক নিতে হবে পঞ্চায়েতে নথিভুক্ত জবকার্ডধারীদের মধ্যে থেকেই।
পুরো বিষয়টি তদারক করতে বলা হয়েছে বিডিও-দের। সম্প্রতি পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এম ভি রাও রাজ্যের সব বিডিও-দের নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স করে বিষয়টি জানিয়ে দেন।