আহতকে দেখতে হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী। পিটিআই
মিনিট দশেক আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তখনও চিকিৎসা সে ভাবে শুরু হয়নি। সবে চিকিৎসকেরা এসেছেন। জানতে চাইছেন, কোথায় চোট লেগেছে।
হঠাৎই সুমিত্রা মাহাতো, সর্বাণী মাহাতো, কিশোর দাসদের সামনে হাজির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঠিক দেখছেন তো! ঘাবড়েই গিয়েছিলেন কিশোর, সুমিত্রারা। সুমিত্রা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে এত কাছ থেকে কখনও দেখিনি। কিছুটা অবাকই হয়েছিলাম।”
তত ক্ষণে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে মঞ্চের ছাউনি ভেঙে বিপত্তির কথা জেনে গিয়েছে গোটা দেশ। মেদিনীপুরে তোলপাড় চলছে। একে একে জখমকে আনা হচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তার মধ্যে যে হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী চলে আসবেন, জানতেন না হাসপাতালের কেউই। মোদী পৌঁছতেই শোরগোল পড়ে। চিকিৎসক, নার্স থেকে মেডিক্যালের কর্তারা তখন তটস্থ। বিভিন্ন ওয়ার্ডে খবর ছড়াতে শুরু করে, মোদী এসেছেন। রোগীদের অনেকেও প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে উৎসাহী হয়ে ওঠেন। হাসপাতালের কাজ, চিকিৎসা ফেলে রেখে সে সব সামলাতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন চিকিৎসক, নার্সরা। হাসপাতালের এক কর্মী মানছেন, “ভিড় জমতে শুরু করেছিল। কাজে সমস্যা হচ্ছিল।”
বিজেপি সূত্রে খবর, দুপুর দেড়টা নাগাদ সভা শেষে মঞ্চ থেকে নেমেই মোদী দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে গাড়িতে তুলে নেন। বলেন, হাসপাতালে যাবেন জখমদের দেখতে। এরপর সটান পৌঁছন হাসপাতালে। প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের পিছনে ছিল মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি হাসপাতালের রাস্তা ধরছে দেখে তিনিও অবাক হয়ে যান।
জখমরা রয়েছেন দো’তলায় সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে। আহতদের দেখতে সিঁড়ি ভেঙে পৌঁছন মোদী। সেখান উপস্থিত চিকিৎসক, নার্সরা তো হতবাক। খবর পেয়ে প্রায় ছুটতে ছুটতে আসেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু, সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা। বেশ কয়েকজন জখমের সঙ্গে কথা বলেন মোদী। জখম এক মহিলার মাথায় হাত রেখে প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “তুমি খুব সাহসী। এই সাহস থাকলে ঠিক সেরে উঠবে।” এ দিন পরে হাসপাতালে এসেছিলেন জেলাশাসক পি মোহনগাঁধী, জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও। রাজ্য সরকারের তরফে আহতদের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়েছে।